
প্রভাতী ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন।
তিনি বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর এখন আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন দাবি করেন।
মৃত ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেরা অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। সব ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে চলতে পারা আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ঘটনার দিন বুয়েটের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে সে চুল কেটেছিল এবং শেভও করেছিল। আত্মহত্যার আগে কি কেউ চুল কাটে বা শেভ করে? আমি ফারদিনের লাশ দেখেছি, তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্যই শুরু থেকে নানা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। বিভ্রান্ত করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে।
সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইদের আমি অনুরোধ করে বলছি, আপনারা আমার সঙ্গে সুলতানা কামাল ব্রিজে চলেন। আমি ব্রিজ থেকে লাফ দেব, সেখান থেকে পড়লে কতটা আঘাত লাগে আপনারা দেখবেন।
বুয়েট প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফারদিনের বাবা বলেন, বুয়েটের ভিসি এবং প্রশাসন কি জানতেন, ফারদিন আত্মহত্যা করেছে যে কারণে তিনি আমার পরিবারকে সান্ত্বনা পর্যন্ত দেননি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে দেখাও করেননি। আমার ছেলে বুয়েটে ভর্তি না হলে এমন পরিণতি হত না।
ডিবির এ তদন্ত নিয়ে নারাজি দেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরপরেও কি আর না রাজি দিতে হবে?
বুধবার পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি ও র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ফারদিনকে কেউ হত্যা করেনি। তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ বলেছিলেন, ফারদিন অন্তর্মুখী ছিলেন। সবার সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করতে পারতেন না। হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। মৃত্যুর সেই রাতে ফারদিন নারায়ণগঞ্জের চনপাড়ায় যাননি। সর্বশেষ তাকে যাত্রাবাড়ীতে দেখা গেছে। সারা রাত এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেছেন তিনি।
আরেক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছিলেন, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্য সব আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা গেছেন।