
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএমডিসি আইন-২০১০ এর ২৯ ধারা মোতাবেক নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ (ডা.) পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনেক প্রতারক ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে প্রতারণা করে যাচ্ছেন দম্ভের সাথে। এমনই একজন প্রতারক প্রেসক্রিপশন ও সাইনবোর্ডে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর কালামিয়া বাজার মোড়স্থ ইসলামি ব্যাংকের বিপরীতে বাঁশখালীর বাসিন্দা কথিত ডাঃ মো: হারুনর রশীদ (এমবিবিএস -সিএম, এমডি-মেডিসিন) ডিগ্রি লাগিয়ে বিরাট ডাক্তার বনে গেলেও তার বিএমডিসির কোন প্রকার নিবন্ধন নেই। তিনি নিজেকে মহিলা, মেডিসিন, শিশু, চর্ম ও যৌন রোগের বিশেষজ্ঞ বলে বাহারী বিজ্ঞাপনও ব্যবহার করেছেন সাইনবোর্ডে। তিনি রোগী প্রতি ভিজিট নেন ৩০০ টাকা। তাঁর কাছে কোন রোগী গেলেই রোগ যাই হোক না কেন ল্যাব টেস্ট বাধ্যতামূলক। ১০০০ টাকা থেকে শুরু করে রোগীর সামর্থ্য অনুযায়ী যত উপরে সম্ভব টেস্ট দিয়ে মোটা অংকের একটা কমিশন হাতিয়ে নেন। রোগীকে সুস্থ করতে এই কথিত চিকিৎসক সবসময় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিকের উপর নির্ভরশীল বলেও তথ্য পাওয়া যায়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, এমবিবিএস -(সিএম) দিয়ে কলকাতা মেডিকেল থেকে পাশ করেছেন বলে দাবী করেন তিনি । বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন না নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চেম্বারে বসে বীরদর্পে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে এভাবে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে হারুনর রশীদ দম্ভ করে বলেন, বিএমডিসি নেতৃবৃন্দ সব চোরের দল। আমরা ভারত থেকে ডিগ্রি নিয়েছি বলে আমাদেরকে রেজিষ্ট্রেশন না দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। কেননা দেশে যারা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে তাদের চাইতে আমাদের যোগ্যতা অনেক বেশী। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমি অনেক ক্ষমতাধর, আমার বিরুদ্ধে যদি কোন সংবাদ প্রকাশ করা হয় তাহলে প্রতিবেদককে জেলের ঘানি টানতে হবে। সাংবাদিক রনজিত কুমার শীলের সাথে আমার দহরম মহরম, ছোট খাটো সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ার সময় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তার সাথে কথা বলার কিছুক্ষণ পরে প্রতিবেদককে ফোন করে সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল পরিচয় দিয়ে একজন হুমকি দিয়ে বলেন, ডা: হারুনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করার আগে যেন তার সাথে প্রেসক্লাবে গিয়ে দেখা করা হয়। অন্যথায় প্রতিবেদকের হাতে হাতকড়া পরানো হবে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন ব্যতীত ডাক্তার পদবী ব্যবহারের কোন সুযোগ। এই কথিত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।