প্রভাতী ডেস্ক: সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সাত দফা দাবিতে নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজ রাজশাহীতে তাদের বিভাগীয় সমাবেশ করবে। বেলা ২টা থেকে রাজশাহী মহানগরীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে এই সমাবেশ শুরু হবে।
সমাবেশে ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না,
আ স ম আবদুর রব, কর্নেল অলি আহমদ, আন্দালিব রহমান পার্থসহ ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা আসবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলছেন, সমাবেশে যেন জনসমাগম কম হয় সে জন্য পরিকল্পনা করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
তবে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক কামাল হোসেন রবি বলেছেন, সমাবেশের জন্য বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে কথাটা ঠিক নয়। সমাবেশের জন্য বাস বন্ধ করা হলে সব রুটেই বন্ধ করা হতো। নাটোর বাস মালিকদের সঙ্গে ঝামেলার কারণে শুধু ঢাকা-রাজশাহী রুটে বাস বন্ধ আছে। তারা সমস্যার সমাধান করে দ্রুত বাস চলাচল শুরুর চেষ্টা করছেন।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহী বিভাগের সমন্বয়ক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, রাজশাহীর এই সমাবেশ থেকে গণআন্দোলন শুরু হবে। রাজশাহী-ঢাকা রুটে বাস বন্ধ থাকলেও সমাবেশে এত মানুষের সমাগম হবে, যা অতীতে ঐক্যফ্রন্ট কিংবা রাজশাহীর অন্য কোনো সমাবেশে হয়নি।
সমাবেশ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঐক্যফ্রন্ট। সেখানেই বক্তব্য দিচ্ছিলেন মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বলেন, সমাবেশের মাত্র ১৪ ঘণ্টা আগে ১২টি শর্তে আমরা সমাবেশ করার লিখিত অনুমতি পেলাম। এই সমাবেশ সফল হবে এবং এখান থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচনের গণআন্দোলন শুরু হবে।
মিনু বলেন, অতীতে বড় বড় নেতাদের বক্তব্য শুনতে মানুষের ঢল নামত। ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশেও তাই হবে। লাখো লাখো মানুষের ঢল নামবে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে। তবে পুলিশের কিছু অতি উৎসাহী এবং উচ্চভিলাসী কর্মকর্তা নানাভাবে অসহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, সমাবেশ থেকে এমন কর্মসূচি আসবে যা দেশের রাজনীতির দৃশ্যপট পাল্টে দেবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও কারামুক্ত হবেন। নির্বাচনের তফসিল ইস্যুতে মিনু বলেন, সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন দেশের জনগণ মানে না। জনগণের প্রয়োজনে আবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করা হবে।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করতে শুরু করেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বলেন, অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শতাধিক নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ গেছে। তবে ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা স্পষ্টভাবে জানাননি মিনু।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকত, মহানগরের সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এমএ গোফরান, নগর সম্পাদক মারুফ আহমেদ পিকু, জাসদ নেতা মনির আহমেদ বাবর, শফিকুল আলম বাবর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের জন্য গত ২২ অক্টোবর পুলিশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। বুধবার তাদের গণকপাড়া মোড়ে সমাবেশ করতে অনুমতি দেয়া হয়। তবে রাতেই ঐক্যফ্রন্টের প্রথম পছন্দ অনুযায়ী মাদ্রাসা ময়দানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।