মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

এমপিদের পদত্যাগে বিএনপির ক্ষতি, সরকারের নয়: তথ্যমন্ত্রী

প্রভাতী ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির এমপিদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সংসদের কিংবা সরকারের কোনও ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে বিএনপির। তিনি বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথেই হাঁটছে এবং দেশে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করতেই তাদের এমপিরা পদত্যাগ করেছেন।’

রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১০ লাখ মানুষের সমাবেশের কথা বলে তারা বড়জোর ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ করেছে। কারণ, যে মাঠে গরুর হাট বসে সেটাই তারা পছন্দ করেছে এবং তার আয়তন হচ্ছে ৫০ হাজার বর্গফুট। একজন মানুষ ঠাসাঠাসি করে দাঁড়ালে কমপক্ষে ৩ বর্গফুট এলাকা লাগে। তাহলে সেই মাঠে কত মানুষ ধরে, সেটি সহজেই অনুমেয়। আমাদের থানা সম্মেলনেও অনেক সময় এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ১০ ডিসেম্বরের পর একদফা দাবি। এখন দেখতে পাচ্ছি ১০ দফা। দাবিগুলো আমি দেখেছি, এগুলো গতানুগতিক। বহুদিন ধরে বলে আসছে, সেখানে মাত্র আর কিছু নতুন দাবি সন্নিবেশ করেছে। অর্থাৎ বিএনপি সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের পথ পরিহার করতে পারেনি। সেই পথ থেকে যতদিন তারা ফিরে না আসবে, ততদিন বিএনপির কোনও মঙ্গল হবে না। ২৪ তারিখ গণমিছিল ডাকাও দুরভিসন্ধি মনে হচ্ছে। এদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। সেদিন সারা দেশে সমাবেশ ডাকা দুরভিসন্ধি বলেই আমি মনে করি।’

বিএনপির গতকালের সমাবেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ১০ দফা নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্র এবং কূটনীতিকদের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিজেদের যে রাজনীতি দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক মতদ্বৈধতা, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা—এগুলো অন্যের কাছে নিয়ে যাওয়া অনুচিত। একইসঙ্গে কূটনীতিকদের অবশ্যই জেনেভা কনভেনশন মেনে চলা উচিত। আর আমাদের ওপর কোনও চাপ নেই। আমরা সবসময় জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমাদের কোনও বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি। কোনও বিদেশি শক্তি এ দেশের ক্ষমতার পালাবদলও করতে পারে না। জনগণই এ দেশের ক্ষমতার মালিক। আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান।’

তিনি  বলেন, ‘গতকালও বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে, ভাঙচুর করেছে। অর্থাৎ যে দল সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নিসন্ত্রাস লালন করে, তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।’

বিএনপির এমপিদের পদত্যাগ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির সর্বমোট ৭ জন সংসদ সদস্য আছে। তারা বলেছিল সরকারের পদত্যাগ দাবি করবে, ১০ তারিখ সরকার হটিয়ে দেবে। এখন দেখা যাচ্ছে নিজেরাই হটে যাচ্ছে, অর্থাৎ নিজেরাই পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়—তারা আসলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সংসদে যেখানে সাড়ে তিনশ’ এমপি, সেখানে ৭ জন পদত্যাগ করলে কিছু আসে যায় না। নিয়ম অনুযায়ী সেখানে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। তবে এতে বিএনপি যে সংসদে কথা বলতে পারতো, সেই পথটা তাদের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। মির্জা ফখরুল সাহেব এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন, কিন্তু তাদের হাইকমান্ডের নির্দেশে তিনি শপথ নিতে পারেননি। এতে বরং বিএনপির ক্ষতি হয়েছে। তার মতো একজন বাকপটু নেতা যদি সংসদে থাকতেন, তাহলে বিএনপিরই লাভ হতো।’

বিএনপি আবারও বলেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না— এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন আরও এক বছর পরে। তবে বিএনপির যে কথার ঠিক থাকে না, সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তারা নয়া পল্টনের বাইরে যাবে না বলেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলাপবাগ মাঠে গেছে, যেখানে গরুর হাট বসে। তবে বিএনপি যাই বলুক, নির্বাচন যদি তারা বর্জন করে, সেটি তাদের জন্য আত্মহননমূলক হবে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print