নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের হৃদয়ে স্থান করে নিচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি। শিক্ষার্থীরা তাদের চরম দুঃসময়ে পাশে পাচ্ছেন তাদের প্রিয় এই নেতাকে। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের ভুল-ভ্রান্তির কারণে এবং অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কারণে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারেনা সেসব শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান তিনি।
সর্বশেষ গত ১লা নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জেএসসি পরীক্ষায় তাঁর দুঃসাহসিক প্রচেষ্টার কারণে ৩০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ পায়।
৩১ নভেম্বর বুধবার দিবাগত রাতে এ ব্যাপারে নিজের ফেসবুক পেইজে একটি স্ট্যাটাস দেন ছাত্রলীগের এই ত্যাগী নেতা।
নুরুল আজিম রনির ফেসবুকের সেই পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল-
“বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে জেএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। কদম মোবারক এম ওয়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০ জন জেএসসি পরীক্ষার্থী স্কুলের উঠানে আগের রাতে কান্না করছে, মা-বাবার তা দেখে চোখ ছলছল করছে। সহ্য করা যায়?
সারাদিন হেডমাষ্টারের দেখা নাই, মোবাইল নম্বর বন্ধ বলছে, এডমিট কার্ডেরও হদিস নাই। যাই হোক রাত ৮ টায় ১৭ জনের এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হলেও বাকী ১৩ জনের এডমিট কার্ড পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডের সহায়তায় হেডমাষ্টারকে রাত ১১ টায় শিক্ষার্থীদের সামনে আনার পর তিনি জানালেন, ১৩ জনের ফরম পূরন ভুলে করা হয়নি। কেমন লাগে শুনতে?
বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজে নৈতিক অবস্থান টলোমলো হলেও জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করে রাত ১২ টায় ১৩ জন পরীক্ষার্থীকে জানাতে পারলাম যে, মানবিক বিবেচনায় সকালে ফরম পুরন করে তোমরা পরীক্ষা দিতে পারবা।
সারাদিনের অর্জন এই আত্মতৃপ্তিটুকু। সম্মিলিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ছোট ভাই শাহাদাত সালাম শাওনকে ধন্যবাদ । খুব কষ্ট করলি সারাদিন বাচ্চাগুলোর জন্য। সকল জেএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভ কামনা।”
অকল্পনীয়ভাবে পরীক্ষা শুরুর ১ ঘন্টা আগে ১৩ জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরন করে তাদের হাতে প্রবেশপত্র তুলে দেন এই নেতা।
এ নিয়ে নিজের ফেসবুক পেইজে রনি লিখেন, সকাল ৯ টা। জে.এস.সি পরীক্ষা শুরুর মাত্র এক ঘন্টা আগে মানবিক কারনে ভূক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরনের সুযোগ করে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড,চট্টগ্রাম। কদম মোবারক এম ওয়াই উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থিদের সবার হাতে এরপরেই প্রবেশপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে।
‘শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে কলঙ্ক মুক্ত করুন। অনৈতিক কাজে লিপ্ত, ধোঁকাবাজ, চরিত্রহীন, প্রতারক, অর্থলোভী মানুষের শরীর থেকে শিক্ষকতার মতো পবিত্র পোষাক খুলে ফেলুন।’
সমাজের সবচেয়ে সৎ, চরিত্রবান, নৈতিক চরিত্রের অধিকারী মানুষটি হবে আমাদের সম্মানিত শিক্ষক, সেই স্বপ্নে দিন গুনছি।
উল্লেখ্য, গত বছর হালিশহর ইডেন স্কুলেও ১১৫ জন জেএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরন না করেই অর্থ আত্মসাত করা হয়েছিলো। হেডমাষ্টারকে আটক করে সেবারও শিক্ষা বোর্ডকে অনুরোধ জানিয়ে পরীক্ষার আগের দিন ফরম পূরন করা হয়েছিলো। মাষ্টার নামের লেবাস লাগানো বিবেকহীন মানুষগুলো ভালো হয়ে যাও।”
উল্লেখ্য,চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে প্রবেশ পত্রের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে আলোচনায় আসেন এই নেতা। পরে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন কলেজের অধ্যক্ষ জাহেদুল ইসলাম।