
প্রভাতী ডেস্ক : শুক্রবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার সুষ্ঠুতদন্তের জন্য তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ শাহানুর রহমান। অপরদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এছাড়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী মামলার এজহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
তবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানা পুলিশ যে অভিযোগ করেছে, তা সুস্পষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবী শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মামলার এজাহারে তার বিরুদ্ধে অপরাধের সুস্পষ্ট তথ্য নেই। ঘটনার তারিখ ও স্থান নেই।’
শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে আদালতে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মামলার এজাহারে বলা হয়েছে হেলেনা জাহাঙ্গীর মানহানি করেছেন। কিন্তু কার মানহানি করেছেন, তা বলা হয়নি। এছাড়া কোনো ব্যক্তিও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। তাই আমরা আদালতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের রিমান্ড বাতিলসহ জামিন আবেদন করেছিলাম। আদালত তা গ্রহণ করেনি।’
রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীর অনলাইন ভার্চুয়াল জগতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, বিভিন্ন সংস্থাকে কটূক্তি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সম্পর্কে মানহানিকর ও মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো বা বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি করে। আসামি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং মহল আছে, যারা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আসামি এ মামলার ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করলেও তার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী দল, গোষ্ঠী, সংস্থা সম্পর্কে কোন তথ্য প্রদান করেনি। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ ও শনাক্তকরণসহ আসামিকে নিয়ে গ্রেফতারি অভিযান পরিচালনার জন্য তার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।
এর আগে বিকেলে গুলশান থানায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ১২টার দিকে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন আইপি টেলিভিশন জয়যাত্রার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।