Search

মঙ্গলবার, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ২রা সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষের সাথে দ্বন্দ্ব : নেপথ্যে ‘ভর্তিবাণিজ্য’

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এবং অভিভাবক ফোরামের নেতা মীর সাহাবুদ্দিন টিপুর একটি ফোনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি তাদের ৪ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপের একপর্যায়ে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বালিশের নিচে পিস্তল রাখি। কোনো… বাচ্চা যদি আমার পেছনে লাগে আমি কিন্তু ওর পেছনে লাগব। শুধু ভিকারুননিসা না, আমি তাকে দেশছাড়া করব।’ তবে এই অডিওকে ভিত্তিহীন ও সুপার এডিটেড বলে দাবি করেছেন অধ্যক্ষ কামরুন নাহার।

অধ্যক্ষ বলেন, আমি ক্যাম্পাসে আসার ৩ দিনের মাথায় তারা (অভিভাবক ফোরাম) আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন। তাদের কথামতো নাকি আমাকে চলতে হবে। এর আগের প্রিন্সিপালকে তারা মোবাইল ছুড়ে মেরেছেন। আমার বাসায় ঢিল মেরেছেন, আমার দরজায় লাথি মেরেছেন। লাথি মেরে আমার চেয়ারও ফেলে দিয়েছেন তারা। তারা চান আমি কিছু আসন ফাঁকা রাখি, যাতে তারা ভর্তিবাণিজ্য করতে পারেন। আমি বলেছি, শিক্ষামন্ত্রী আমাকে এখানে থাকতে বলেছেন। এ প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন। আমি যদি এদের কথায় ভর্তিবাণিজ্যের মতো অনিয়ম করি, মন্ত্রীর কাছে আমি তখন কী জবাব দেব। আমার ইতিহাসে অন্যায়ের কোনো দাগ নেই। এর আগের কোনো প্রিন্সিপাল এখানে কেন থাকতে পারেননি, এখন বুঝতে পারছি।

কামরুন নাহার আরো বলেন, এবারের ভর্তির লটারির সময়ও তারা ১২০টি সিট খালি রেখেছেন। এছাড়া কিছু শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০-১৬০ সিট খালি আছে। মূলত সেগুলোতে অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে তারা আমাকে অনেক আগে থেকে চাপ দিচ্ছেন। ভর্তিবাণিজ্য করতে না পেরে আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ ষড়যন্ত্র করছেন জিবি সদস্য ও অভিভাবক ফোরামের লোকজন। অধ্যক্ষ আরো বলেন, তাদের অনেকগুলো গ্রুপ ছিল। এখন ভর্তিবাণিজ্য করতে সবাই আমার বিরুদ্ধে এক হয়েছে।

সাড়ে ৪ মিনিটের ওই কথোপকথনে এমন কিছু গালি রয়েছে যা প্রকাশের অযোগ্য। এতে বিব্রত ভিকারুননিসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ওই অডিও ভিকারুননিসার দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্যে আঘাত হেনেছে বলে মন্তব্য করছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সদস্যরা। তারা অনেকে বলছেন, অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এ বছরের প্রথম দিন প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানে আসেননি বললেই চলে। কেউ তাকে স্কুলে আসার জন্য অনুরোধ করলে তিনি (কামরুন নাহার) সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ সুজন জানান, যোগদানের পর থেকে কলেজের বাসভবনে থাকলেও কামরুন নাহার কখনো অফিসে বসেননি। অভিভাবকরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও তিনি কারো সঙ্গে দেখা করেন না। ভিকারুননিসার যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবক মারা গেছেন, তাদের বিনাবেতনে পড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হলেও সে বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি অধ্যক্ষ। সভাপতি হিসেবে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার স্কুলের জন্য সময় দিতে পারেন না বলে অধ্যক্ষ বেপরোয়া হয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print