
প্রভাতী ডেস্ক : দেশে চলমান বিধি-নিষেধ শিথিল করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একইসঙ্গে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ আরো ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কমিটি। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। চলমান অবস্থায় লকডাউন শিথিল করার সরকারি সিদ্ধান্তে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। গত ১২ জুলাই কমিটির ৪১তম অনলাইন সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো—
১. চলমান কঠোর লকডাউন আরো ১৪ দিন বাড়ানো।
২. লকডাউনের অংশ হিসেবে কোরবানির হাট বন্ধ রাখা। প্রয়োজনে ডিজিটাল হাট পরিচালনার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। তবে, সরকার লকডাউন শিথিল করে সীমিত পরিসরে কোরবানির হাট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলে, সেক্ষেত্রে কিছু বিধি-নিষেধ প্রয়োগ করা।
৩. সরকার সারাদেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়িয়েছে, যা সন্তোষজনক। দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়ানোর জন্যে বেসরকারি পর্যায়েও পরীক্ষা বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে পরীক্ষার জন্যে প্রয়োজনীয় কিটের দাম আরো কমিয়ে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মূল্য কমিয়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা।
৪. বর্তমানে অনেক কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি আছে। ফলে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন অতি জরুরি। তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পর্যায়ে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেই উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
৫. দ্রুত দেশের আরও বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনার উদ্দেশ্যে টিকার বয়সসীমা ১৮ বছরে নামিয়ে আনা, জাতীয় পরিচয়পত্র-বিহীন জনসাধারণকে টিকার আওতায় আনা, রেজিস্ট্রেশন সহজ করা ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া।
৬. কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নেওয়া সরকারের উদ্যোগগুলোকে সাফল্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
ঈদ ও পশুর হাট বিষয়ে জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, জুলাইয়ের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে। তাই কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। সেগুলো হলো—
১. শহর এলাকায় কোরবানির পশুর হাট বসার অনুমতি না দেওয়া।
২. শারীরিক দূরত্ব ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে উন্মুক্ত স্থানে কোরবানির পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
৩. বয়স্ক ব্যক্তি (৫০ বছর বা তার বেশি) ও অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কোরবানির হাটে না যাওয়া।
৪. হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্যে নির্দিষ্টভাবে আলাদা পথ রাখা।
৫. বাজারে আসা সবার জন্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা।
৬. জনসাধারণকে ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে না গিয়ে, যে যেখানে আছেন সেখানে অবস্থান করার বিষয়ে উৎসাহিত করা।
৭. জনসাধারণের অনলাইন কোরবানির হাটের সুবিধা গ্রহণে উৎসাহিত করা।
৮. বাড়ির আঙিনায় কোরবানি না করে, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করা।
৯. ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত যেভাবে আয়োজন করা হয়েছিল, এবারও তেমনভাবে ঈদুল আজহার জামাত আয়োজন করা।