বৃহস্পতিবার, ১৭ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃহস্পতিবার, ১৭ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার, ১৭ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২রা শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

রাহাত্তারপুল এলাকায় স্থানীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ৭ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

মাহমুদা বাপের বাড়ি সংলগ্ন আব্দুল জব্বার মার্কেটের ৬ দোকান

বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তারপুল এলাকায় ৬ জন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক ৭ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী এবং ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাহাত্তারপুল এলাকার মাহমুদা বাপের বাড়ি সংলগ্ন আব্দুল জব্বার মার্কেটের ৬ জন মালিক হলেন লোকমান হোসেন (সও:), জমির (সও:), জাকির (সও:) ,ইলিয়াছ (সও:), মোঃ ইসমাইল এবং মোঃ হানিফ। মোঃ ইসমাইল এবং মোঃ হানিফ ক্রয় সূত্রে মালিক হলেও লোকমান হোসেন, জমির, জাকির ও ইলিয়াছ ওয়ারিশ সূত্রে মালিক। তারা দীর্ঘদিন ধরে এসব দোকান গৃহ নির্মাণ করে সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করে আসছেন।

কিন্তু স্থানীয় সন্ত্রাসী মাহমুদা বাপের বাড়ির জিন্নাত আলী, টিপু, এনাম ,পটিয়ার নুরুল হকসহ বহিরাগত অজ্ঞাত আরো কিছু সন্ত্রাসী প্রায় এক বছর পূর্বে এসব দোকানে তাদের অংশ রয়েছে বলে দোকান মালিকদের নিকট থেকে চাঁদা দাবি করে আসছে। সন্ত্রাসীরা নিজেদেরকে ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউনুছ কোম্পানির লোক পরিচয় দিয়ে বলে, তাদের হাত অনেক লম্বা। তাদের কথা না শুনলে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে হবে। কিন্তু এরপরেও ব্যবসায়ীরা তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে সন্ত্রাসীরা এক পর্যায়ে দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। তখন ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে বাকলিয়া থানায় অভিযোগ করলে তৎকালীন ওসি নেজাম উদ্দিন এসআই জহিরের নেতৃত্বে ফোর্স প্রেরণ করে দোকানের তালা খুলে ব্যবসায়ীদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেন। এরপর থেকেই ব্যবসায়ীরা শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা চালিয়ে যায়। কিন্তু বিগত ১ মাস ধরে উক্ত সন্ত্রাসীরা পুনরায় চাঁদা দাবি করতে থাকে। তাই ব্যবসায়ী লোকমান এবং সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে ১৪ই ফেব্রুয়ারি বাকলিয়া থানায় অভিযোগ প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন -জিন্নাত আলী, নুরুল হক, টিপু এবং এনাম সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আমাদের নিকট থেকে চাঁদা দাবি করতেছে। চাঁদা দাবীর কারণ জানতে চাইলে সন্ত্রাসীরা বলে যে, এই দোকানগুলোতে তাদের অংশ রয়েছে। কিন্তু এসব দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, তাদের সাথে বাড়ির ভিতরের জায়গার একটি অংশ নিয়ে আমাদের সাথে আদালতে মামলা চলমান। সন্ত্রাসীরা কিশোরগ্যাং নিয়ন্ত্রণ করার কারণে এলাকাবাসী তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পান না। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুছ কোম্পানির ইন্ধনে সন্ত্রাসীরা আরো বেপরোয়া হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের নিকট আমাদের বিনীত আবেদন, এসব ভূমিদস্যু এবং সন্ত্রাসীদেরক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করে ব্যবসায়ীদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসার সুযোগ প্রদান করা হোক।

সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনুছ কোম্পানি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হচ্ছে অর্থাৎ জিন্নাত আলী গং খুব ভালো মানুষ। উল্টো যারা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছে তারাই সন্ত্রাসী। তাদের বিরোধ মীমাংসা করার জন্য আমি নিজেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু লোকমান হোসেন গং আমার কথা শুনেনা। আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব বলায় ভয়ে ইসমাইল এবং হানিফ নামের দুজন পালিয়ে বিদেশে চলে গেছে।

এলাকার শান্তিপ্রিয় লোকজন বলেন, এই ঘটনাটি চরম আকার ধারণ করতে পারে। প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ অতীব জরুরী।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print