Search

শুক্রবার, ২২শে আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ২২শে আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ২২শে আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে সফর ১৪৪৭ হিজরি

আল্লামা শফীকে হত্যার অভিযোগে মামলায় মামুনুল হকসহ আসামি ৩৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : হেফাজতের প্রয়াত আমির আল্লামা শফিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে হেফাজতের বর্তমান কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এই মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৭ই ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ (জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিপলু কুমার দে এর) এ মামলাটি দায়ের করেন আল্লামা আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু হানিফ জানান, মামলায় বাদীসহ ৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

এর আগে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেনন হেফাজতে ইসলামের একাংশের নেতারা। আল্লামা শফির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

বুধবার সকালে চট্টগ্রামে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জীবনকর্ম, অবদান শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ অভিযোগ করেন, আহম্মদ শফীর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। এরপরই এই মামলা দায়ের হল।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা ও হাটহাজারী মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের পরিচালক আহমদ শফী মারা যান।

এজাহারে বলা হয়, “আসামিরা মানসিকভাবে নির্যাতন করে আল্লামা শফীকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন ।”

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা ও হাটহাজারী মাদ্রাসার দীর্ঘদিনের পরিচালক আহমদ শফী মারা যান। তার আগের দিন শফীর অব্যাহতি এবং তার ছেলে মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক আনাস মাদানির বহিষ্কার দাবিতে মাদ্রাসায় বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

সেই দ্বন্দ্বের জেরে ১৭ সেপ্টেম্বর শূরা কমিটির বৈঠকে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মহাপরিচালকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন ‘বড় হুজুর’ শফী।

ওই বৈঠকে শফীর ছেলেসহ দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় দৃশ্যত আহমদ শফীর সুদীর্ঘ দিনের কর্তৃত্বের অবসান ঘটে। সেই বৈঠকের পরপরই আহমদ শফীকে মাদ্রাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়া হলে পরদিন তিনি মারা যান।

সেদিনই ঢাকায় সাংবাদিকদের শফীপুত্র আনাস মাদানি বলেছিলেন, আগের দিনের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনার কারণে ‘টেনশনের’ কারণে ‘হার্টফেইল’ করে তার বাবা মারা গেছেন।

পরে নেতৃত্বের প্রশ্নে হেফাজতে ইসলামী বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জুনাইদ বাবুনগরী আমিরের পদে আসেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মামুনুল হক এ বছরের ১১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় এসে হেফাজতের বর্তমান আমীর জুনাইদ বাবুনগরীর সাথে বৈঠক করে আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিকে বহিষ্কারের দাবি করেন আহমদ শফীর কাছে। আহমদ শফী বিক্ষুব্ধদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।

“আনাস মাদানিকে বহিষ্কার না করলে হেফাজতের তৎকালীন আমীরের চরম ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় বিক্ষুব্ধদের পক্ষ থেকে। এ সময় অসুস্থ আহমদ শফীকে বিক্ষুব্ধরা নানাভাবে বিরক্ত করেন এবং হুমকি দেন।

“১৭ সেপ্টেম্বর আহমদ শফীকে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেন এবং তার নাকে লাগানো অক্সিজেন নল খুলে ফেলেন বিক্ষুব্ধরা। এসময় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তার চিকিৎসার জন্য মাদ্রাসার বাইরে আনার চেষ্টা করেও পারা যায়নি।”

আহমদ শফী হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত আল-জমিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ১৯৮৬ সাল থেকে। তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের বেফাক) সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print