শনিবার, ১০ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১০ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১০ই মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ই জিলকদ ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে মুজিববর্ষের নামে চাঁদাবাজি : আটক ৩

প্রভাতী ডেস্ক: চট্টগ্রাম নগরীর নন্দনকানন ও আগ্রাবাদ এলাকায় মুজিব বর্ষের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৩জনকে গ্রেপ্তারক রেছে পুলিশ।

শুক্রবার তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও শনিবার(৭ই মার্চ) দুপুরে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সংবাদ সম্মেলন করে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের অনুসারী বলে দাবি করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, বাবর দেশে না থাকায় তার ‘নাম ভাঙিয়ে’ এই ব্যক্তিরা চাঁদাবাজি করছিলেন, মূলত তারা নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকা যোগাড়ের জন্যই তারা চাঁদাবাজি করে।

‘একতা যুব সংঘ’ ও ‘স্বপ্ন চূড়া’ নামের ‍২টি সংগঠনের নাম দিয়ে গত ৪ মাস ধরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মুজিব বর্ষের কথা বলে তাদের চাঁদাবাজির প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা এই দুই সংগঠনের নামের প্যাডে দেখা গেছে, সর্বনিম্ন পাঁচশ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলেছে তারা।

আটক ৩জন হল- নন্দনকানন ৩ নম্বর গলির বাসিন্দা বাটুল বড়ুয়া ডানো (৩৮), নন্দনকানন দুই নম্বর গলির বাসিন্দা শেখ রিয়াজ আহম্মেদ রাজু (৪০) এবং হেম সেন লেনের বাসিন্দা শাহজাহান (৪৫)। এই চক্রের অন্য দুই সদস্য লিটন এবং চান্দু ওরফে রনিকে খুঁজছে পুলিশ।

শনিবার দুপুরের সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরেই আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল মুজিব বর্ষের নাম দিয়ে একটি অসাধু চক্র ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করছে।

“পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে আমরা এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াই। এরমধ্যে ৪ঠা মার্চ ৫ সদস্যের এই চক্রটি নন্দনকানন এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং না দিলে মারধর ও ব্যবসা করতে না দেয়ার হুমকি দেয়।”

শুক্রবার চাঁদার টাকা নিতে নন্দনকানন এলাকার সানমার ভবনের ‘থ্রিএ হোম স্কেচ’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানে আসবে বলে হুমকি দিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা। এ তথ্য জানতে পেরে পুলিশ শুক্রবার বিকেলে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে অবস্থান নেয়।

পরে তারা চাঁদার টাকা নিতে আসলে রাজু ও শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসীন। তিনি বলেন, “অন্য ৩জন পালিয়ে গেলে আগ্রাবাদ এলাকা থেকে বাটুল বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বাটুল বড়ুয়া নিজেকে এনায়েত বাজার ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি বলে দাবি করেন।

প্রশ্নের জবাবে পুলিশ কর্মকর্তা শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, “রেজিস্ট্রেশনবিহীন দুটি সংগঠন স্বপ্ন চূড়া ও একতা সংঘের নামে তাদের চাঁদাবাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

“মূলত তারা নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক সংগঠনের নাম ব্যবহার করে এসব করছে। যুবলীগের ওয়ার্ড ভিত্তিক কোনো কমিটি নেই। চাঁদাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।”

শাহ মো. আব্দুর রউফ বলেন, “যুবলীগ নেতা বাবরের নাম ভাঙিয়ে তারা ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চেয়েছে। কিন্তু বাবর দেশে নেই। সেই সুযোগেই হয়ত এরা তাঁর নাম ভাঙিয়ে, বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করছে। আদৌ জড়িত থাকলে কেউই বাদ যাবে না আইনগত ব্যবস্থা থেকে।”

মুজিব বর্ষের নাম করে শহরে এরকম চাঁদাবাজির আরও গ্রুপ সক্রিয় আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়ত বিভিন্ন গ্রুপ থাকতে পারে। কেউ চাঁদাবাজির চেষ্টা করলে পুলিশকে জানান। অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

“মুজিব বর্ষকে কেন্দ্র করে কেউ যেন ইমেজ সংকট করতে না পারে সেজন্য আমরা সচেষ্ট আছি।”

গ্রেপ্তার ৩জন ও পলাতক দুই জনের বিরুদ্ধে থ্রিএ স্কেচ হোম নামের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৩জনকে শনিবার বিকালে আদালতে হাজির করা হবে।

উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ উপলক্ষে কাউকে চাঁদাবাজির দোকান না খোলার জন্য গত বুধবার কড়া হুশিয়ারি দেন ওবায়দুল কাদের।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print