শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৮ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

প্রাপ্তির আশায় অনেক সাংবাদিক নৈতিকতায় আপোষ করছেন – ইকবাল সোবহান চৌধুরী

প্রভাতী ডেস্ক: ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, সমাজে সব ক্ষেত্রেই অবক্ষয় হয়েছে। অবক্ষয় হয়েছে সাংবাদিকতারও। ফলে সাংবাদিকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে যাচ্ছে।

আপনাদের শুরুর সময় সাংবাদিকতা কেমন ছিলো, আর এখন কেমন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা যখন শুরু করেছি, তখন আমাদের যারা পূর্বসূরি ছিলেন তারা ছিলেন আমাদের আদর্শ। বর্তমানে সেই সুযোগটা কমে গেছে। এখন মিডিয়ার বিস্তার ঘটেছে। সাংবাদিকদের পরিবার অনেক বড় হয়েছে। এখন প্রযুক্তির কারণে অত বেশি তথ্য রাখতে হয় না। আগে তথ্য নিতে যেতে হতো। আর এখন আপনি চাইলে গুগলে গিয়ে বা ইন্টারনেটে গিয়ে সব তথ্যই পাচ্ছেন। সেটা শুধু দেশি না, বিদেশী রেফারেন্সও আপনি পাচ্ছেন। ফলে সাংবাদিকতায় এখন পরিশ্রমের প্রবণতা কমে গেছে।

সঠিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় সাংবাদিকেরা আগে অনেক বেশি ভূমিকা রাখতেন এখন নেই কেন? এমন প্রশ্নে ইকবাল সোবাহান চৌধুরী বলেন, এর দু’টি কারণ। আমাদের যারা পূর্বসূরি ছিলেন তাদের একটা নীতি আদর্শ ছিলো। এ কারণে তাদের অনেক সাহস ছিলো। আদর্শ বা ভিশন বাস্তবায়নে তারা সাংবাদিকতা করতেন। রাষ্ট্রের কাছে কোন স্বার্থের জন্য বা পাওনার জন্য তারা লালায়িত ছিলেন না। সব জায়গায়ই তো অবক্ষয়ের ফলে অন্যান্য পেশার মতো আমাদের মধ্যেও প্রাপ্তির আকাঙ্খা জেগে উঠেছে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা নেই।

বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারা? রাষ্ট্র ব্যবস্থা সাংবাদিকরা না সংবাদপত্রের মালিকরা? এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, সবকিছু মিলিয়েই। সাংবাদিকতা তো বিচ্ছিন্ন কোন অংশ না। সমাজেরই একটা প্রতিচ্ছবি। টোটাল ব্যবস্থার একটি পার্ট হলাম আমরা। আয়না যদি ভালো না হয় তাহলে প্রতিচ্ছবি ভালো হবে না । সমাজ, রাষ্ট্র যদি আয়না হয় তাহলে সাংবাদিকরা প্রতিচ্ছবি। কর্পোরেট কালচারে মালিকেরা অনেক সময় সাংবাদিকদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।

সাংবাদিকতার ভবিষ্যত কেমন দেখেন আপনি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি যে অবক্ষয়ের কথা বলেছি, সেটার শিকার কিছু সংখ্যক সাংবাদিক হতে পারেন। কিন্তু এই পেশার শাশ্বত একটা চরিত্র আছে। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ, কর্পোরেট চ্যালেঞ্জ, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। তারপরও কিন্তু সাধারণ মানুষ সাংবাদিকদের উপর নির্ভর করতে চান। এটাই সাংবাদিকতার বড় শক্তি।

বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার অবস্থা এখন কেমন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা আসলে আপেক্ষিক আপনার কাছে যেটা বস্তুনিষ্ঠ, সেটা আরেকজনের কাছে বস্তুনিষ্ঠ নাও হতে পারে। এটা হল দৃষ্টিকোণের বিষয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কী সাংবাদিকতার গতি কমিয়ে দিয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি মনে করি না। কারণ প্রযুক্তি যেমন আমাদের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে, আবার অন্যদিকে প্রযুক্তি অনেক সময় ঝুঁকিও তৈরী করে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print