
প্রভাতী ডেস্ক: মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি কক্সবাজারের সাবেক ওসি প্রদীপের সব রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও পদক বাতিলে ব্যবস্থা নিতে মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়েছে।
সিনহা হত্যা মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে রবিবার কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে প্রদীপের বিরুদ্ধে দুই শতাধিক নিরীহ মানুষকে বিচারবহির্ভুত হত্যার অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম এ আবেদন জানান ।
এদিন সকাল সোয়া ১০টায় যুক্তিতর্ক শুরু হয় জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে। এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে কঠোর নিরাপত্তায় সাবেক ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার সাক্ষ্য প্রদানকালে এক নারী সাক্ষী আদালতকে বলেন, তার দুই মেয়েকে প্রদীপ অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে থানায় আটকে রেখে দীর্ঘদিন ধর্ষণ করেছে। এ বিষয়ে মামলা করেছেন বলেও জানান ওই নারী।
সিনহা হত্যা ছাড়াও প্রদীপ ও তার সহযোগীদের নামে ১২টি হত্যা মামলা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের দাবি, দাবিকৃত চাঁদা দিতে না পারায় মাদককারবারি সাজিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে প্রদীপ।
পিপি আদালতকে জানান, ওসি থাকাকালীন নরপিশাচের মতো আচরণ করেছেন প্রদীপ কুমার দাশ। তার অপরাধ কর্ম নিয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করায় ফরিদুল মোস্তফা খান নামে এক সাংবাদিককে চরমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এটাই প্রদীপের অপেশাদারি আচরণের জলন্ত প্রমাণ। নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান আদালতে সাক্ষীও দিয়েছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগও উঠেছে প্রদীপের বিরুদ্ধে। এসব কারণে ওসি থাকাকালীন পাওয়া রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও পদক বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।
পিপি জানান, ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাদের জেরা শেষে ৬ ডিসেম্বর কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় ১৪ আসামি আদালতে তাদের লিখিত বক্তব্য দেন। পরদিন অপর আসামি নন্দ দুলাল তার লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
পরে বিচারক আদালতে উপস্থিত সব আসামিকে পৃথকভাবে তাদের বক্তব্য নিয়ে সরাসরি সওয়াল-জবাব করেন। বিচারক আসামিদের প্রত্যেককে নিজেদের অপরাধের বিষয়ে সরাসরি জানতে চান। লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি ওসি প্রদীপসহ আসামিরা মৌখিকভাবে বিচারকের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।