
প্রভাতী ডেস্ক : খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০শে মে (বৃহস্পতিবার) চিকিৎসকদের কাছ থেকে জেনেছি, তার শরীরে টেম্পারেচার নেই, শ্বাসকষ্ট নেই। কিন্তু পোস্ট কোভিড জটিলতায় তার হার্ট ও কিডনি অ্যাফেক্টেড। এটা নিয়ে চিকিৎসকেরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, চিন্তিত।
শুক্রবার(২১ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মহিলা দল আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, অসুস্থ হওয়ার পর এই প্রথম বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসতে দেখেছি । যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, তার পরিবারের পক্ষ থেকে যখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হয়েছিল, যদিও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। চিকিৎসকেরা বলছেন, উন্নত দেশে এ ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে, যেগুলোর মাধ্যমে তার চিকিৎসা সম্ভব, যেটা এই দেশে নেই। সেই কারণে বারবার করে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের সরকার আবেদনে সাড়া দেয়নি।’
খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে না দেওয়ায় সরকারের সমালোচন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা মনে করে, বেগম জিয়া যদি দেশের বাইরে যান, তাহলে আবার তিনি তাদের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করবেন। ভয়টা কেন, ভয়টা এ কারণেই এদেশের জনগণের যে নেতা, সেটা তিনি। তিনি গণতন্ত্রের শেষ আশ্রয়স্থল।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের কাছ থেকে আমরা তার অবস্থার বিষয়ে যেটা পেয়েছি, তার অক্সিজেন সেচ্যুরেশন এখন বেশ ভালো, জ্বর এখন নেই এবং তার শ্বাসকষ্টও এখন নেই। কিন্তু যেটা একটু উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়, তার করোনা পরবর্তী যে জটিলতা, সেই জটিলতায় তার হার্ট ও কিডনি একটু আক্রান্ত। এটা নিয়ে তারা (চিকিৎসকেরা) অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত।’
চিকিৎসকেরা চেষ্টা করছেন, এটাকে তারা কীভাবে নিরাময় করবেন। তবে আমরা আশাবাদী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে খালেদা জিয়ার। ১৫ এপ্রিল সিটিস্ক্যান করান তিনি। পরে অক্সিজেনজনিত সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ২৮ এপ্রিল ব্যক্তিগত ও এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। ৩ মে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিলে সেদিন বিকালে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয় খালেদা জিয়াকে। পরে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে লিখিত চিঠি দেন তার ভাই শামীম এস্কান্দার।
১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর দুটি পরীক্ষায়ও তিনি করোনা পজিটিভ হন। ৬ এপ্রিল চতুর্থ পরীক্ষায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।