
বিশেষ প্রতিনিধি: লোহাগাড়ার চুনতি ইউনিয়নের সাতগড় এলাকায় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি কর্তৃক সরকারি খালের জায়গা দখল করে ব্রীজ ও প্রাচীর নির্মান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা প্রশাসন কাজ বন্ধ রাখার জন্য মুছলেকা নেওয়ার পরেও তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানার সাতগড় গ্রাম। এই গ্রামে অলীকুল শিরোমনি মাওলানা শাহ্ আতাউল্লাহ হোছাইনী (রহ:) প্রকাশ-বুড়া মাওলানা সাহেব কেবলার মাজার অবস্থিত। মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, বাজার, পাহাড়, খাল -বিল ইত্যাদি সৌন্দর্যের অপরুপ নিদর্শন যেন এই গ্রাম। এই গ্রামে দমদমা বিল আরেক সৌন্দর্য বহন করে।বর্ষাকালে মাইলের পর মাইল ছোট ছোট শত শত টিলা থেকে পাহাড়ি ঢল সাতগড়ের বড় ঢেপা থেকে বেয়ে এই দমদমা বিলে এসে জমা হয়। এই খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হয়ে এলাকাবাসীকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই বছর স্থানীয় আবুল হাশেম নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এই খালের উপর ব্যক্তিগত কালভার্ট ও খালের জায়গা দখল করে প্রাচীর নির্মাণ করে। যার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এবং ফলশ্রুতিতে বন্যার কবলে পড়বে এলাকাবাসী।
এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) অবহিত করলে তিনি এসিল্যান্ড মহোদয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ড মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ড কাজ না করার জন্য আবুল হাসেমের নিকট থেকে মুচলেকাও নেন এবং তাকে ৫ দিনের সময় দেন। উক্ত সময়ে সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গা পরিমাপের কথাও বলেন।
খাল দখল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এসিল্যান্ড নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, মুচলেকা দেওয়ার পরেও তিনি কাজ করতেছেন সেটা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে খুব ঝামেলায় আছি, অফিসও বন্ধ। অফিসিয়ালি কিছু নিয়ম-নীতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন খোলার পরে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ব্যাপারে আবুল হাসেম বলেন, পৈত্রিক সম্পত্তি থাকায় তিনি সেখানে প্রাচীর ও কালভার্ট নির্মাণ করতেছেন। খালের জায়গা দখল করে নয় নিজের জায়গায় কালভার্ট এবং প্রাচীর নির্মাণ করতেছেন। মুচলেকা প্রদানের বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকটা ধমকের সূরে তিনি বলেন, আমি এমপির লোক। এসব মুচলেকা টুচলেকা দেখার সময় নাই।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, এই খালটি ২২ ফুট প্রশস্ত ছিলো। কিন্তু আবুল হাশেম কোনরকম আইনের তোয়াক্কা না করে ১০ ফুট খাল দখল করে বাড়ীর আঙ্গিনা করেছেন। এখন আবারো ২ফুট খালের জায়গা দখল করে প্রাচীর এবং কালভার্টের নির্মাণ কাজ করতেছেন। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,উপজেলা প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিলে খালটি প্রান ফিরে পাবে এবং আমরা বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাব।