বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি

২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা শনাক্ত ২১৯ জন, মৃত্যু ৪ জন

প্রভাতী ডেস্ক : প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ। ভাইরাসটি নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে এ সংক্রমণ আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

বুধবার(১৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ হুশিয়ারি দেয়া হয়। অন্য দিনের মতো বুধবারও বেলা আড়াইটায় এ সংক্রান্ত ব্রিফিং হয়। এতে জানানো হয়, বুধবার সারা দেশে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ২১৯ জন, মারা গেছেন ৪ জন।

মঙ্গলবার শনাক্ত হয়েছেন ২০৯ জন, মারা গেছেন ৭ জন। ৪৮ ঘণ্টায় ৪২৮ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ১১ জন। এ পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩১। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৯ জন। ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়।

এতদিন ঢাকা আর নারায়ণগঞ্জে এ রোগীর সংখ্যা ছিল বেশি। এখন ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ অন্য জেলায়ও অধিকসংখ্যক সংক্রমিত রোগী চিহ্নিত হচ্ছে। করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত এ ব্রিফিংও অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়।

বারিধারার বাসভবন থেকে এতে যুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।

এতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩১ জন। আর মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৫০ জন। মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ২০৯। আর মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৭।

গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত) ২ হজার ৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয় ১ হাজার ৭৪০ জনের। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৭ জন নতুন করে সুস্থ হয়েছেন। সব মিলে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন।

বুলেটিনে বলা হয়, নতুন করে মারা যাওয়া ৪জনের মধ্যে ৩জন পুরুষ ও ১জন নারী। এদের মধ্যে ৩৫-৪০ বছর বয়সী আছেন ১জন ও সত্তরোর্ধ্ব ২জন। অপরজন হলেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন। তার বয়স হয়েছিল ৫০-এর কিছু বেশি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে ২০টি ল্যাবে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। আগের ১৭টির সঙ্গে নতুন ৩টি যুক্ত হল। তিনি বলেন, অনেকে পরীক্ষা করতে চান না। পরীক্ষা করান, নিজে ভালো থাকুন, পরিবারকে ভালো রাখুন।

তিনি আরো বলেন, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ২ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। ঢাকায় অন্যান্য স্থান মিলিয়ে মোট সাড়ে ৪ হাজার শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। নতুন আরো হাসপাতাল সংযোজন করা হচ্ছে।

ব্রিফিংয়ের শুরুতে নিজের বক্তৃতায় ডা. মঈন উদ্দীনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমরা ওই চিকিৎসকের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছি। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাসপাতালে ছুটে যাই আমি।

এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে মনে হচ্ছে আমরা আমাদের ভাইকে হারালাম। সহযোদ্ধাকে হারালাম। ডা. মঈন উদ্দীনের স্ত্রীও একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক। তিনি করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, অবাধে চলাচল করলে ভাইরাসে আক্রান্ত হতেই হবে। যারা সংক্রমিত হবেন তাদের অধিকাংশের লক্ষণ হয়তো প্রকাশ পাবে না। তবে আক্রান্তদের দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি বরণ করতে হতে পারে।

প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print