শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের বিমানযাত্রীদের জন্য কর্ণফুলীতে ওয়াটার বাস !

প্রভাতী ডেস্ক: কর্ণফুলী নদীতে আগামী সপ্তাহেই চালু হচ্ছে ওয়াটার বাস। যানজট থেকে বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের নিস্তার দিতে এই বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দুইটি ওয়াটার বাস চালু করা হলেও আগামী মাসে আরো দুইটি বাস এতে যোগ হবে। বিমানবন্দরের ফ্লাইটের সাথে সমন্বয় করে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ সার্ভিস চালু থাকবে। সদরঘাট টার্মিনালে পৌঁছার পর ওয়াটার বাসে পতেঙ্গা টার্মিনাল হয়ে শাটল বাসে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়া হবে। সদরঘাট টার্মিনালেই রিসিভ করা হবে লাগেজ। প্রাথমিকভাবে বিমানবন্দরের মাত্র ১০ শতাংশ যাত্রীকে টার্গেট করে জনপ্রতি ৪০০ টাকা ভাড়ায় ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। এসএস ট্রেডিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওয়াটার বাস পরিচালনা করবে। বন্দরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানন, ইতোমধ্যে সদরঘাটে টার্মিনাল এবং পতেঙ্গা এলাকায় পল্টুনসহ টার্মিনাল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা থেকে অত্যাধুনিক দুইটি ওয়াটার বাস তৈরি করে আনা হয়েছে। সদরঘাট থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘাট পর্যন্ত চলাচল করতে সর্বোচ্চ ত্রিশ মিনিট সময় লাগবে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি যাত্রী বিশ্বের নানা দেশে এবং দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন।
যাত্রীদের সাথে ড্রাইভার ও সিঅফ করার লোকজন মিলে আরো অন্তত পাঁচ সাত হাজার মানুষ বিমানবন্দরে যাতায়ত করেন। এর বাইরে পতেঙ্গা এলাকার বিভিন্ন শিল্প কারখানার কয়েক হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পতেঙ্গা এলাকায় যাতায়াত করেন। এই বিপুল মানুষ প্রতিদিনই গন্তব্যে যাতায়াত করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ভোগের শিকার হন। বন্দর কেন্দ্রিক যানজটও এক্ষেত্রে বড় সংকট তেরি করে। এতে বহু মানুষেরই ফ্লাইট মিস করার ঘটনাও ঘটে। শহর থেকে বিমানবন্দর গিয়ে ফ্লাইট ধরাটা রীতিমতো একটি কঠিন কাজ । ভোগান্তি লাঘবে বন্দর কর্তৃপক্ষ সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের জন্য ওয়াটার বাস চালুর উদ্যোগ নেয় বলে জানিয়েছিলেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ ।

হাত ব্যাগ ছাড়া অন্য কোনো লাগেজে যাত্রীদের হাত দিতে হবে না। সব লাগেজই ওয়াটার বাসের লোকজন বহন করবেন। পরবর্তীতে সদরঘাট টার্মিনালে বিভিন্ন ফ্লাইট অপারেটরের বুথ স্থাপন করা হবে। তখন যাত্রীদের লাগেজ চেক ইন সদরঘাটেই সম্পন্ন করা হবে। যাত্রীরা ওয়াটার বাসে পতেঙ্গা বিমানবন্দরের কাছে সদ্য নির্মিত টার্মিনালে গিয়ে নামবেন। ওখান থেকে ৩০০ মিটার পথ শাটল বাসে বিমানবন্দর টার্মিনালে প্রবেশ করবেন।

সূত্র জানিয়েছে, প্রতিটি ওয়াটার বাস ৩০ জন যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। ঘন্টায় ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে ওয়াটার বাসগুলো চলাচল করবে। সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত দশ কিলোমিটার দূরত্বে যেতে ওয়াটার বাসের ২২ মিনিটের মতো সময় লাগবে। পতেঙ্গা থেকে বাসে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে আরো ছয় সাত মিনিট লাগবে। সব মিলিয়ে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ত্রিশ মিনিট সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়া হবে। টার্মিনাল থেকে ওয়াটারবাস কিংবা শাটল বাস সবই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
সূত্র জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রাইডককে কাজটি দিয়েছিল। ড্রাইডকের পক্ষেই এসএস ট্রেডিং ওয়াটার বাস পরিচালনা করবে।
এসএস ট্রেডিং ও টিএসডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবাব হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, জাপানের দুইটি ৪০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন দিয়ে ওয়াটার বাস তৈরি করা হয়েছে। হংকং থেকে এই বাসের ডিজাইন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্ধারিত উক্ত ভাড়ার মধ্যে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছা আবার ফিরতি পথে বিমানবন্দর থেকে লাগেজসহ সদরঘাট টার্মিনালে পৌঁছার সুবিধা থাকবে। সদরঘাট কিংবা বিমাববন্দর থেকে যাত্রীদের লাগেজ বহন থেকে শুরু করে সব কাজই এসএস ট্রেডিং এর লোকজন করবে। তিনি বলেন, কারো যেন ফ্লাইটের সমস্যা না হয় সেদিকে সজাগ থেকে সিডিউল তৈরি করা হয়েছে। যতক্ষণ বিমান চলাচল থাকবে ততক্ষণই ওয়াটার বাস চলাচল করবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print