রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি

কারাগারেই জানাজা- নীরবে দাফন হলো মুরসির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাতভর কড়া নিরাপত্তা শেষে মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ১৮জুন মঙ্গলবার সকালে দাফন করা হয়েছে। পূর্ব কায়রোতে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই সাবেক এ মুসলিম ব্রাদারহুড নেতার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মুরসির ছেলে আহমাদ মুরসি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা নিজেরাই কারা হাসপাতালে তাঁর (বাবার) মৃতদেহের গোসল দিয়েছি এবং সেখানেই জানাজা পড়েছি।

কায়রোর শারকিইয়া এলাকার কারাগারে যেখানে মুরসিকে রাখা হয়েছিল, সোমবার রাতে সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, কারাচত্বরে রাতে জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়।

মঙ্গলবার দেশটির নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমেও খবরটিকে কম গুরুত্বের সাথে ছেপেছে। শুধু দৈনিক আল-মাসরি আল-ইয়াওম খবরটিকে তাদের প্রথম পাতায় জায়গা দিয়েছে। অন্য সব দৈনিক ভেতরের পাতায় এবং ছোট আকার মুরসির মৃত্যু সংবাদ ছেপেছে। সেসব খবরের কোনোটিতে মুরসি যে প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাও উল্লেখ করা হয়নি।

২০১৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে মুরসি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ছিলেন। ৬৬ বছর বয়সী মুরসি ডায়াবেটিস, লিভার ও কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৯৫১ সালে আল-আদওয়াহ গ্রামে জন্ম নেওয়া মুরসি গত শতকের ৭০-এর দশকে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক করেন। পরে পিএইচডি করতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান।

১৭জুন সোমবার এক মামলার শুনানিতে আদালত কক্ষেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে অচেতন হওয়ার পর মারা যান ৬৭ বছর বয়সী এই সাবেক প্রেসিডেন্ট।

মুসলিম ব্রাদারহুড এই মৃত্যুকে ‘নিশ্চিত হত্যা’ আখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেছেন, ‘ ব্রাদারহুড নেতা মুরসি শহীদ হয়েছেন।’

মিসরের প্রথম অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ব্রাদারহুডের মুরসি। কিন্তু ২০১৩ সালে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন মিসরীয় সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্টের মসনদে বসেন মুরসির হাতে সেনাপ্রধান হওয়া আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। সেই বছরই মুরসির নেতৃত্বাধীন মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ করা হয়। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিভিন্ন অভিযোগে অনেককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। মুরসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অর্থের বিনিময়ে কাতারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি পাচার করেছেন।

২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের জুন মাসে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে নিম্ন আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে মুরসিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

ধারণা করা হচ্ছে, মুরসি এমন মৃত্যুতে মিসরীয় সরকারের ওপর মানবাধিকার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে। বিশেষ করে হাজার হাজার ইসলামপন্থী এবং সেক্যুলার আন্দোলনকারী কারাগারে রয়েছেন তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের বিষয়ে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print