
নারীদের গৃহকর্মের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার করেছে সংসদীয় কমিটি। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি সাগুফতা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি), মো. আব্দুল আজিজ, শাহিদা তারেখ দীপ্তি, পারুল আক্তার, তাহমিনা বেগম, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, রেজিয়া ইসলাম এবং সাবেরা বেগম অংশ নেন।
বৈঠকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের আওতায় কারাতে প্রশিক্ষক নিয়োগে ডিপিপি আরও বাস্তবসম্মত করা এবং পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং যৌন হয়রানি বন্ধের আইন নিয়ে প্রচারণা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞের মতে, স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট পদ্ধতিতে একটি হিসাব করে নারীর কাজ মূল্যায়ন করা সম্ভব। নারীরা বাসার কাজে যে সময় দিচ্ছেন, তা বাইরে করলে কত টাকা পেতেন, এটার হিসাব করে জিডিপির মূল হিসাবের পাশাপাশি এই হিসাব করা যায়। এটা এক ধরনের ছায়া মূল্যায়ন।এই স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারি নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে লিঙ্গ সমতা, পরিবারের আয়-ব্যয়, সার্বিক দায়িত্বপালনের মতো বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, অর্থনীতিতে নারীর এ অবদান যুক্ত করা সম্ভব হলে ৭০ থেকে ৮০% জিডিপি বাড়বে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরুষদের তুলনায় সাড়ে তিন গুণ বেশি মজুরিবিহীন কাজ করেন নারীরা। একজন নারী সপ্তাহে গড়ে ২৪ ঘণ্টা, অর্থাৎ দিনে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা গৃহস্থালির মজুরিবিহীন কাজ করেন।
অন্যদিকে, “শ্রম জরিপ ২০২২” এর প্রতিবেদনে কৃষিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অবদান বেশি বলে তথ্য উঠে এসেছে। নারীদের শুধু মাঠে গিয়ে কাজ নয়, ঘরে হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল পালন, বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদনসহ নানা হিসাব করে দেখা গেছে— কৃষিতে পুরুষের তুলনায় নারীদের অবদান বেশি।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ৪৩% এর বেশি নারী পুরোপুরিভাবে গৃহস্থালি কাজের সঙ্গে যুক্ত। পুরুষের সংখ্যা সেখানে ১% এর কম। দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিডিপি) নারীর অবদান ২০%। তবে নারীর এই গৃহস্থালি কাজকে জাতীয় আয় পরিমাপের পদ্ধতিতে (এসএনএ) যোগ করা গেলে জিডিপিতে নারীর অবদান দাঁড়াবে ৪৮%।