ঘামের মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা হওয়াটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অনেক সময় শরীর এই প্রক্রিয়ায় নিজ থেকে শীতল হতে পারে না। আর বাইরের অধিক তাপমাত্রার প্রভাব- সব মিলিয়ে দেখা দেয় ‘হিট স্ট্রোক’।
ইট দিস নট দ্যাট ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে টেক্সাসের ‘এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটি’র ফ্যামিলি মেডিসিন’র ক্লিনিক্যাল সহযোগী অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল নীল বলেন, “বাইরের উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার কারণে যখন ব্যক্তির দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যায় আর ঘাম ও নিঃশ্বাসের মাধ্যমে নিজেকে ঠাণ্ডা করতে পারে না তখন ‘হিট স্ট্রোক’ দেখা দেয়।
এর ফলে রোগীর হৃদগতি বাড়ে, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়, ক্লান্তিভাব, বমিভাব, পেশিতে টান ও ঝিঝি ধরা ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়। তারপর এক পর্যায়ে রোগী সম্পূর্ণভাবে অচেতন হয়ে পড়েন। চিকিৎসা ছাড়া হিট স্ট্রোক মারাত্মক রূপ নিতে পারে।
যে কোনো বয়সের মানুষই ‘হিট স্ট্রোক’ এর শিকার হতে পারেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বয়স্করা, যাদের বয়স সত্তরের ওপর তাদের এই ঝুঁকি বেশি। কারণ এসময় শরীর শীতল হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
এছাড়াও রক্তচাপ, খিঁচুনি ও মানসিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত ওষুধ দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে সচেতন না থাকায় এই ঝুঁকি আরও বেশি।
বয়স বাড়ার পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা যেমন- স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ ‘হিট স্ট্রোক’য়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করা যায়।
আর্দ্র থাকা: গরম আবহাওয়ায় পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে হবে এবং চিনিযুক্ত পানীয় ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা উচিত। অনেকের পানি পানের পরিমাণ নির্দিষ্ট করা থাকে। তাদের উচিত হবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি পান করা।
বিশ্রাম: দিনের উষ্ণ সময়ে সকাল ১০ থেকে বেলা ৫টা পর্যন্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। ব্যায়ামের পরে শরীর ঠাণ্ডা করতে তাপ ও আর্দ্রতা উন্নত করার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।
ঠাণ্ডা পরিবেশ বজায় রাখা: শরীর শীতল রাখতে ঘর, অফিস বা গাড়িতে ঠাণ্ডা পরিবেশ রাখা উচিত।
এছাড়াও- হালকা ও বাতাস চলাচল করে এমন পোশাক পরা, রোদে সমস্যা থাকলে বাইরে না যাওয়া, ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা, ঘাড়, বাহুমূল ও মাথায় ঠাণ্ডা কিছু দিয়ে চাপ দেওয়া, ফ্যানের সামনে বসে মুখে পানি স্প্রে করে শরীর ঠাণ্ডা রাখা যায়।
পাখা: কেবল বাতাসের তাপমাত্রা নয় বরং ত্বকের ওপর বাতাস চলাচলের ফলে ঘামের বাষ্পীভবন ঘটিয়ে পাখার বাতাস শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারে।
তবে বাতাসে অধিক আর্দ্রতা থাকলে এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহার উপকারী।