রবিবার, ১৩ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৩ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৩ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় ভুয়া ডাক্তারের ছড়াছড়ি – পর্ব ১

ভুয়া ডাক্তার মামুনুর রশীদ

বিশেষ প্রতিনিধি: বিএমডিসি আইন-২০১০ এর ২৯ ধারা মোতাবেক নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ (ডাক্তার) পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনেক প্রতারক “ডাক্তার” পদবী ব্যবহার করে প্রতারণা করে যাচ্ছেন দম্ভের সাথে। এমনই একজন প্রতারক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ প্রেসক্রিপশন ও সাইনবোর্ডে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই প্রতারকের গ্রামের বাড়ী চকরিয়ায় হলেও তিনি প্রতারণার জন্য বেছে নিয়েছেন সাতকানিয়া এবং চট্টগ্রামের খাজা রোড ও পূর্ব বাকলিয়া এলাকাকে। সপ্তাহের বিভিন্ন দিন ও সময়ে তিনি ৩টি চেম্বারে রোগী দেখেন। একটি চেম্বার সাতকানিয়া বাংলা ক্লাব সংলগ্ন জাকারিয়া মেডিকেল হল , আরেকটি চেম্বার খাজা রোড আমিনের দোকানের মক্কা ফার্মেসী এবং অপরটি নগরীর কালামিয়া বাজারের পূর্ব পাশে আব্দুল লতিফ হাটখোলা এলাকার আনন্দ সাবান ফ্যাক্টরীর পাশে সেবা ফার্মেসী।

সরেজমিনে নগরীর কালামিয়া বাজারের পূর্ব পাশে আব্দুল লতিফ হাটখোলা এলাকার আনন্দ সাবান ফ্যাক্টরীর পাশে সেবা ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রেসক্রিপশন ও সাইনবোর্ডে (ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল সাইয়েন্স ঢাকা, ভি.এইচ.ডব্লিউ.পি.টি- রাবেতা হাসপাতাল) কথিত ডিপ্লোমা লাগিয়ে বিরাট ডাক্তার বনে গেছেন । তিনি নিজেকে মহিলা, শিশু, বাত রোগ, খৎনা এবং মাইনর সার্জারীতে বিশেষজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেন প্রেসক্রিপশনে। তিনি রোগী প্রতি ভিজিট নেন (চেম্বারে) ১০০ টাকা, (অনকলে)৩০০ টাকা। তাঁর কাছে কোন রোগী গেলেই রোগ যাই হোক না কেন ল্যাব টেস্ট বাধ্যতামূলক। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে রোগীর সামর্থ্য অনুযায়ী যত উপরে সম্ভব টেস্ট দিয়ে মোটা অংকের একটা কমিশন হাতিয়ে নেন। চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি ভুঁইফোড় ল্যাবে তিনি তার রোগীদেরকে টেস্টের জন্য বাধ্য করেন। রোগ থাকুক বা না থাকুক তার কথায় ঐসব নাম সর্বস্ব ল্যাব সেবাগ্রহীতার রোগ আছে মর্মে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করেন। রোগীকে সুস্থ করতে এই কথিত ডাক্তার সবসময় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিকের উপর নির্ভরশীল বলেও তথ্য পাওয়া যায়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে চেম্বারে বসে প্রতারণা করে যাচ্ছেন নির্ভয়ে।

বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে এভাবে প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রতারক চিকিৎসক বলেন, এই জীবনে আর ডাক্তার পদবী ব্যবহার করে প্রতারণা করবে না ।সংবাদ প্রকাশ করে যেন তার সম্মান নষ্ট করা না হয়। এসময় তিনি চা-নাস্তা খাওয়ার জন্য প্রতিবেদককে ২০০০/- নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, বিএমডিসি রেজিষ্ট্রেশন ব্যতীত ডাক্তার পদবী ব্যবহারের কোন সুযোগ। এই কথিত চিকিৎসকের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন, তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

★ আগামী সংখ্যায় প্রকাশিত হবে এই প্রতারক চিকিৎসকের নারী কেলেঙ্কারির একটি বিশেষ প্রতিবেদন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print