
নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে টিকেট থাকা সত্ত্বেও চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি টাকা না পেয়ে এক সেনা সদস্যকে মারধর এবং নির্যাতনের অভিযোগে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার ১৮ দিন পর নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩জনকে আটক করে র্যাব।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই মোবাইল ক্লিপ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ৮ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মেইল ট্রেনে টিকিট কেটে বগিতে উঠতে যাচ্ছিলেন ওই সেনা সদস্য। এসময় ট্রেনের বগি সামনে দাঁড়ানো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রাকিব বাড়তি দেড়শ টাকা দাবি করে। কিন্তু সেনা সদস্য বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য তাকে মারধর শুরু করে। এমনকি নিজের পরিচয় দিয়েও রক্ষা হয়নি তার।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিওকারী আব্বাস খান বলেন, সেনাবাহিনীর ওই সদস্য বলেছিলেন আমি তো ৩শ’ টাকার টিকিট কাটছি। কেন টাকা দেব। তারা বলে এখানে টিকেটের কোনো মূল্য নাই। টাকা দিতে হবে। তখন সেনা সদস্যের সঙ্গে কথা কাটাকাটির সময় উনাকে মারধর শুরু করে।
সেনা সদস্যকে চরমভাবে নাজেহালের ১৮ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ করে সেনা সদস্যকে নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। শুরু হয় অভিযুক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্তের পাশাপাশি আটক অভিযান। একে একে আটক করা হয় ঘটনায় জড়িত মাইন হাসান ওরফে রকিব, রিটন চাকমা এবং রবিউল ইসলামকে।
লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ৪-৫ জন তাকে মারধর করা শুরু করে। এক পর্যায়ে সে নিজেকে সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয়। সে সময় তারা সেনাবাহিনীকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করেন। এখন পর্যন্ত ৩জনকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের জানামতে সেখানে ৪ জন ছিল। আমরা আর ১জনকেও গ্রেফতার করব।
আটককৃত ৩জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, ঢাকাগামী মেইল ট্রেনের সিট ব্যবস্থায় কিছুটা ত্রুটি থাকার সুযোগে তারা যাত্রার আগেই সেগুলোর দখল নিতো। পরবর্তীতে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি দেড়শ থেকে তিনশ টাকার বিনিময়ে বগিতে উঠতে দিতো তারা। ঘটনার দিনেও তারা যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছিল।
উপ অধিনায়ক রেজোয়ান উর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তাদের অবস্থান শনাক্ত করেছি। পরে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়েছি। মারধরের সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর আরও এক সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলেও সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। আটককৃত তিনজনের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, প্রাণহানির চেষ্টা, বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্নের অভিযোগ ৫টি মামলা করা হয়েছে।