
নিজস্ব প্রতিবেদক : ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুতে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতুতে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়? আমরা জানি কোথায় গেছে। দুবাইয়ের কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? আমেরিকার কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? মালয়েশিয়ায় কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? সব জানি। এগুলো সব বের হবে।
শুক্রবার (২৭ মে) বিকেলে নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, পদ্মা ব্রিজ থেকে নাকি খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেবে। এর অনেকগুলো কারণ হতে পারে। একটি হলো খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার চেয়ে জনপ্রিয়। যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এরশাদের পতন ঘটিয়েছেন। কিন্তু আপনি সেই এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। খালেদা জিয়া যখন সড়কে বের হবে, তখন লাখ লাখ মানুষ সমবেত হবে। সেটিকে আপনি ভয় পান। কারণ আপনি যখন সমাবেশ করতে যান, তখন পয়সা দিয়ে লোক আনলেও থাকতে চায় না।
জনগণ আওয়ামীলীগকে বর্ডার পর্যন্ত নিয়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ যখন হেরে যায়, তখন বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টা করে। এই জোয়ারে চুনোপুঁটি, ধামাচাপা পার্টি, চুরিচামারি পার্টি, হেলমেট লীগ, সন্ত্রাসী লীগ কোনো লীগই থাকবে না। এদেরকে তাড়িয়ে বর্ডার পর্যন্ত নিয়ে যাবে দেশের জনগণ। পালানোর পথ পাবে না এরা।
ঋণের টাকায় পদ্মা সেতু করা হয়েছে দাবি করে বিএনপির এ নেতা বলেন, পদ্মা ব্রিজের কথা বলছেন- আমরা কোনো ঋণ নেইনি। এই যে প্রতিবছর টাকা পরিশোধ করছেন, এটি কীসের টাকা পরিশোধ করছেন? প্রতিদিন পকেট থেকে টাকা বের করে পদ্মা ব্রিজ বানাইছেন। সব ঋণের টাকা। মিথ্যা কথা বলছেন জনগণের সঙ্গে। বিশ্বব্যাংক তাদের দুর্নীতির কারণে পদ্মা ব্রিজের প্রকল্প বাতিল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। মামলা হওয়ার পরও বিচার করেনি সরকার।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, উন্নয়ন দেখাচ্ছেন, বুঝবেন আর কয়দিন পরে। ডলার একশ টাকা পার হয়ে গেছে। আরে এই ডলারে যখন মালামাল আমদানি হবে আরও যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, উন্নয়নের ঠেলা বুঝবেন। আপনারা বিদেশে টাকা জমিয়েছেন চুরি করে, দুর্নীতি করে। দেশের মানুষ তো আর টাকা জমায়নি। তার আয় দিয়ে চলতে হবে। দেশের মানুষ কীভাবে চলবে?
সত্যিকার আওয়ামী লীগ নেতাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দাবি করে খসরু বলেন, আমরা আর বাড়ি ফিরে যাব না। ওদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়েছে। ওরা কিন্তু পুলিশকে ব্যবহার করার চেষ্টা করবে। কিন্তু পুলিশ তো বোকা নয়। পুলিশ তো দেশের মানুষ। তারা কি বুঝে না দেশের মানুষ কী চায়? বুকে সাহস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যখনই বিপদ আসবে তখন দেখবেন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ চালায় এখন সন্ত্রাসীরা। যারা সত্যিকারের আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেওয়ার যে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তা রীতিমতো হত্যার হুমকি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছেন তা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। দেশবাসী তার কথায় বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য যাবতীয় শিষ্টাচারকে অতিক্রম করেছে। গণতান্ত্রিক সভ্য দেশে কোনো প্রধানমন্ত্রীর মুখ দিয়ে এমন বক্তব্য বের হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপর আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ।