শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

অপহৃত চালকের লাশের সন্ধানে দুর্গম পাহাড়ে পিবিআইয়ের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় দেড় বছর আগে অপহৃত গাড়ি চালক মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিনের (৩৪) সন্ধানে চট্টগ্রামের পটিয়ার দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অপহৃত মোসলেম চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের এনা মিঞার ছেলে।

শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও দুর্গম পাহাড়ের কালামার ছড়ায় অভিযান চালায় পিবিআই। তবে পাওয়া যায়নি লাশেরর সন্ধান।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পটিয়া উপজেলার পূর্ব হাইদগাঁও পাহাড়ি এলাকা থেকে উপজাতি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায় গাড়ি চালক মোসলেমকে। পরে তারা দাবি করেন ৩ লাখ টাকার মুক্তিপন। এ ঘটনায় পটিয়া থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। থানা পুলিশ মামলার কোনো সুরাহা করতে না পারলে তদন্তভার পায় পিবিআই। আটক পরিমল তঞ্চচঙ্গা ও পরিতোষ তঞ্চচঙ্গাও স্বীকার করেছে উথই প্রু মারমা নামে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর হয়ে তারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে লাশ ঘুম করেছিল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা পিবিআই পুলিশের পরিদর্শক মহিউদ্দিন সেলিম। তিনি বলেন, চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদ গ্রামের গাড়ি চালক মোসলেম উদ্দিন ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি নুরুল আলম মাস্টারের প্রজেক্টের পাশ থেকে অপহরণ হয়। এক পর্যায়ে উপজাতি সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে প্রথমে ৩ লাখ টাকা ও দফায় দফায় তারা ১০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করে।

তিনি আরো বলেন, গাড়ি চালক অপহরণ ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামি স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পটিয়ার দুর্গম পাহাড়ে লাশের সন্ধানে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা এবং চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকাটি পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কিডন্যাপ হাইড পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত। ওই হত্যা মামলার ২ আসামিকে আটকের পর তাদের নিয়েই পিবিআই লাশ উদ্ধারের অভিযানে নামে।

কখনো কাদায় ভরা পাহাড়ি মেঠো পথ, আবার কখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন গিরিপথ। আবার কখনো পাহাড়ি ঝিরি এবং খাল। সবকিছু পেরিয়ে ২ পাহাড়ি সন্ত্রাসীকে নিয়ে পায়ে হেঁটে এগিয়ে যাচ্ছে পিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম।

৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পায়ে হাঁটার পর হত্যার সম্পৃক্ত দু’আসামিই দেখিয়ে দেয় পিকআপ চালক মোসলেমকে অপহরণ এবং হত্যার পর লাশ গুম করার স্থান। এরপর শুরু হয় লাশের সন্ধানে সম্ভাব্য স্থানগুলোতে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। কিন্তু পাহাড়ি ঢলের কারণে লাশ উদ্ধারে তাদের চরম বেগ পেতে হয়।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ‘চন্দনাইশের ধোপাছড়ি থেকে এই মামলার ২ আসামিকে পিবিআই গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি অংশ নেয়ার পাশাপাশি লাশ গুমের কথা স্বীকার করে। এরপরই আমরা তাদের নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য দুর্গম এই এলাকায় আসলাম। এখন আমাদের অভিযান চলছে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print