Search

বৃহস্পতিবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃহস্পতিবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

‘করোনাকালে বিষন্নতায় ভুগছেন ৬১.২ শতাংশ তরুণ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাকালে দেশে তরুণদের ৬১.২ শতাংশ বিষন্নতায় ভুগছেন এবং ৩.৭ শতাংশ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে বেসরকারী একটি সংস্থার জরিপে উঠে এসেছে। বিষন্নতায় ভোগা ৪৪.৩ শতাংশ তরুণ জানিয়েছেন তারা তাদের বিষন্নতা বা মানসিক অস্থিরতা ভাগ করে নেয়ার জন্য কাউকেই পাশে পান না।

শনিবার (১০ জুলাই) সকালে অনলাইনে ‘করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয়; আত্মহননের পথে তরুণ সমাজ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনসহ জরিপ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীভিত্তিক সামাজিক প্রতিষ্ঠান আঁচল ফাউন্ডেশন৷

করোনাকালীন সময়ে তরুণেরা প্রধাণত ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা, পড়াশোনা ও কাজে মনোযোগ হারানো, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, একাকী হয়ে যাওয়া, অনাগ্রহ থাকা সত্ত্বেও পরিবার থেকে বিয়ের চাপ, আর্থিক সমস্যা, সেশন জট, অনিশ্চিত ভবিষ্যত, মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি এসব মানসিক চাপজনিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে বলে জরিপে উঠে আসে৷

জরিপের তথ্যে, করোনাকালীন সময়ে ৮৫.১ শতাংশ তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে, যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী৷ এ সময়ে আগের চেয়ে তাদের মানসিক চাপ বেড়েছে বলেছেন ৬৩.৫ শতাংশ৷

সংবাদ সম্মেলনে আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজ, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্লে থেরাপিস্ট মোশতাক আহমেদ ইমরান এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত মার্চে আঁচল ফাউন্ডেশন করোনাকালীন পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার হার সংক্রান্ত একটি জরিপ পরিচালিত করে৷ যেখানে দেখা যায়, আত্মহননকারীদের মধ্যে প্রায় ৪৯ শতাংশই তরুণ। যাদের বয়স ১৮- ৩৫ এর মধ্যে।

ফাউন্ডেশন জানায়, তরুণদের মাঝে আত্মহত্যার হার বৃদ্ধির কারণ খুঁজতে এরই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের জুন এর ১-১৫ তারিখ পর্যন্ত ‘আত্মহত্যা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তরুণদের ভাবনা’ শীর্ষক একটি জরিপ পরিচালনা করে আঁচল ফাউন্ডেশন। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা, আত্মহত্যার কারণ চিহ্নিতকরণ ও তার সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা এবং সবাই যাতে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্যোগী হয় সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা।

জরিপে ১৮-৩৫ বছরের ২০২৬ জন অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ছিল ১৮- ২৫ বছর বয়সী ১৭২০ জন তরুণ-তরুণী। নারীর সংখ্যা ১২৯৩ জন বা ৬৩.৮ শতাংশ ও পুরুষের সংখ্যা ৭৩১ জন বা ৩৬.১ শতাংশ এবং ট্রান্সজেন্ডার ছিলেন ০. ১০ শতাংশ।

গবেষকেরা জানান, প্রয়োজনের বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। জরিপ অনুসারে মাত্র ১৪. ৯ শতাংশ তরুণ ২ ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করেন। বাকি ৮৫.১ শতাংশ দুই ঘণ্টার বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটান। তাদের মধ্যে ২৭.৬ শতাংশ দৈনিক ৬ ঘণ্টার বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অতিমাত্রায় ব্যবহার করেন।

মানসিক বিভিন্ন চাপের ফলে অনেকের মাঝেই আত্মহত্যা করার চিন্তা বা প্রবণতা দেখা দিয়েছে। জরিপে দেখা যায় তরুণদের ৫০.১ শতাংশই আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করেছেন। এদের মধ্যে করোনাকালীন সময়েই আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছেন ২১.৩ শতাংশ। জরিপের ৯৩.৪ শতাংশ মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কথা জানলেও মাত্র ৮.৫ শতাংশ বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিয়েছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print