শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

৫৪ দিন পর ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

প্রভাতী ডেস্ক : টানা ৫৪ দিন পর রাজধানীর গুলশানে নিজের বাসা ফিরোজায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন। এর আগে রাত ৮টা ১০ মিনিটে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন চিকিৎসকরা। শনিবার তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে রাতে চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানা গেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এর ৬ দিন পরে ৩ মে তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পরে অবস্থার উন্নতি হলে এক মাস পর গত ৩ জুন চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে কেবিনে ফিরিয়ে আনা হয়।

পোস্ট কোবিড জটিলতায় খালেদা জিয়া পুরনো রোগ আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিকের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে তার চিকিৎসা চলে।

গত ১০ এপ্রিল গুলশানের বাসা ফিরোজায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। করোনামুক্ত হন ৯ মে।

এর আগে শুক্রবার তার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক সমকালকে জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক যে অবস্থা, তাতে তাকে হাসপাতালে না রেখে বাসায় রেখেও চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তার হার্ট, কিডনি ও লিভারের অবস্থা ভালো নয়। এর জন্য তাকে এখন শুধু ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। একমাত্র বিদেশে নিলে এর ভালো চিকিৎসা সম্ভব। দেশে যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে তাকে হাসপাতালে না রাখলেও চলবে। এ অবস্থায় তার জন্য হাসপাতাল ও বাসা একই। বরং বাসার নিজস্ব পরিবেশে তিনি মানসিকভাবে আরেকটু ভালো থাকবেন।

তিনি আরো জানান, করোনা-পরবর্তী জটিলতায় খালেদা জিয়ার ফুসফুস, হার্ট, লিভার ও কিডনি শরীরের এ চারটি অঙ্গই আক্রান্ত হয়েছে। হৃদরোগের কারণে খালেদা জিয়ার শরীরের যেকোনো একটি চেম্বার বা অংশের মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। এরমধ্যে লিভার ও কিডনি প্রায় অর্ধেক কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। তিনি স্বাভাবিক কার্যক্রম যথাযথভাবে করতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের (প্রতিস্থাপন) সুপারিশ করেছেন। এ অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তারা। এখন হাসপাতাল ত্যাগ করার আগে তার ছাড়পত্রে একই সুপারিশ করা হবে।

এ দিন মেডিকেল বোর্ডের অপর একজন চিকিৎসক জানান, করোনা পরবর্তী এমার্জেন্সি সিচুয়েশন মোকাবিলার জন্য খালেদা জিয়াকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে ফুসফুস জটিলতার কারণে তাকে বেশ কয়েকদিন অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়েছে। ফুসফুসে পানি সরানোর জন্যও তাকে হাসপাতালের জরুরি সেবা দেওয়ার দরকার ছিল। কিন্তু এখন তার সেসব সমস্যা না থাকায় বাসায় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে পারবেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়া নিজেও বাসায় ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন বলে ওই চিকিৎসক জানান।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print