
প্রভাতী ডেস্ক : ‘অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে’ পাহাড় কাটা এবং জলাশয় ভরাট করা যাবে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কমিটির পূর্বানুমোদন নিতে হবে।
সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৃহস্পতিবার(১৮ই ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নির্বাহী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ সচিব জিয়াউল হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির সিদ্ধান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের অবহিত করেন পরিবেশমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পাহাড় কাটার প্রয়োজন হলে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছ থেকে হিল কাটিং ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে তদানুসারে পাহাড় কাটতে হবে। পাহাড় কাটার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট প্রত্যাশী সংস্থা কর্তৃক কঠোরভাবে তদারকি করতে হবে। তিনি আরও জানান, পুকুর, ডোবা, খালবিল, নদী এবং কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক জলাধার ভরাট বা শ্রেণি পরিবর্তন করা নিরুৎসাহিত করা হবে। অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে ভরাট করার প্রয়োজন হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে করতে হবে। তবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার আওতাধীন প্রাকৃতিক জলাশয় কিংবা পুকুরগুলো বাধ্যতামূলকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় কোনো ভরাট কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, দেশের পরিবেশের সুরক্ষায় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এজন্য দেশের পরিবেশের উন্নয়নে সরকার সম্ভাব্য সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবে। যে কোনো মূল্যেই দেশের পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে। ২০১৮ সালের জাতীয় পরিবেশ নীতিতে পূর্বের নীতিমালার ১৫টি বিষয় ছাড়াও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, পাহাড়, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এবং জীব নিরাপত্তা, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা প্রস্তুতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ নীতিতে চিহ্নিত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থাগুলো তাদের নিজ নিজ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবে।
কমিটির সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো আছে-হাসপাতাল বা ক্লিনিকে পরিবেশবান্ধব ইনসিনারেটর, ইটিপি ইত্যাদি স্থাপন করাতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। পলিথিন, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মন্ত্রী জানান, বায়দূষণ নিয়ন্ত্রণে ছিদ্রযুক্ত ইট তৈরি এবং বিভিন্ন ধরনের ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহার ধাপে ধাপে বাধ্যতামূলক করা হবে। ব্লক ইট তৈরিতে শুল্ক হ্রাস অথবা সরকারি প্রণোদনা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ব্লক ইটের ব্যবহার বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, নির্মাণকাজের টেন্ডার শিডিউলে বায়ুদূষণ রোধে সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্টের পাশাপাশি বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে। নিয়মিতভাবে পর্যায়ক্রমে ফিটনেসবিহীন যানবাহন রাস্তা থেকে প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।