
প্রভাতী ডেস্ক : লাখ লাখ ছাত্র, শিক্ষক, ভক্তদের কাঁদিয়ে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন দেশের প্রবীণ শীর্ষ আলেম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদরাসার সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফি।
লাখ লাখ মুসল্লীর অংশগ্রহণে শনিবার বাদ জোহর বেলা ২টায় দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদরাসা প্রাঙ্গনে শতবর্ষী প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফির জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন তার বড় পুত্র মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ। জানাযার আগে তিনি উপস্থিত লোকজনসহ দেশবাসীর কাছে তাঁর বাবার জন্য দোয়া চান। জানাযার আগে দেওয়া বক্তব্যে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বাবা আমাদের এতিম করে চলে গেছেন। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন। বাবা দীর্ঘ ৮০ বছর হাটহাজারী মাদরাসার খেদমত করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।
এদিকে জানাযা শেষে মাদরাসার ভেতরের বায়তুল আতিক জামে মসজিদ কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মাদরাসার উত্তর-দক্ষিণ পাশের সড়কে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই জানাযায় আলেম, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তাসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন। জানাযার নামাজ মাদ্রাসা মাঠের বাইরে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড, বিপরীত দিকে মিরেরহাট পর্যন্ত এবং অন্যদিকে হাটহাজারী কলেজ মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আর মাদরাসা মাঠসহ মাদরাসা ভবনের বিভিন্ন তলায় ও ছাদেও শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে জানাযায় অংশ নেন। কোথাও তিল ধারন করার জায়গা অবশিষ্ট ছিল না। অনেকে তীব্র রোদের মধ্যে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে জানাযায় অংশ নেন। এদিকে শাহ আহমেদ শফীর লাশ পৌঁছানোর আগেই লোকে লোকারণ্য দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসা প্রাঙ্গণসহ পুরো হাটহাজারী এলাকা। এ যেন মানুষের মহাসমুদ্র। বর্ষীয়ান এই আলেমকে শেষ বিদায় জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা অভিমুখে।
শনিবার ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন লাখো ভক্ত-অনুসারীরা। জনতার ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় প্রশাসনকে। তাই জানাযায় যোগ দিতে আসা জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাটহাজারী বাস স্টেশন থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানাযা উপলক্ষে এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা।
এদিকে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাযাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন সাত ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করে। এর মধ্যে হাটহাজারী উপজেলায় ৪ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৪ প্লাটুন এবং ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়া উপজেলার প্রতিটিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দুই প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।গত শুক্রবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রুটিন দায়িত্বে থাকা ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক আদেশে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি মাঠে অবস্থান করে। এদিকে র্যাব-৭-এর কর্মকর্তারা জানান, শনিবার সকাল থেকে র্যাবের ১৫ থেকে ১৭টি টহল টিম মাঠে মোতায়েন ছিল। হাটহাজারী থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়।
এদিকে জানাযার সময় হাটহাজারীতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলমসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন জানান, আল্লামা আহমদ শফির জানাযা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাইনি। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করায় সবাইকে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
উল্লেখ্য শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী। রাত ১১টার দিকে গেন্ডারিয়ার আসগর আলী হাসপাতাল থেকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মাদরাসা জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদে আল্লামা শফীর লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গোসল এবং কাফন শেষে ভক্ত অনুসারীদের লাশ দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। মধ্যরাতে তার লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা দেয়।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাবের পাহারায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসে পৌঁছায় । এসময় ছাত্র শিক্ষকসহ ভক্তরা অঝোড়ে কাদঁতে থাকে। প্রিয় হুজুরের লাশ শেষ বারের মত দেখতে এগিয়ে যান ছাত্র শিক্ষকরা।
সেখানে সমাগতদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন হেফাজত ইসলামে বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবু নগরী। তিনি বলেন, মরহুম আহমদ শফি আমাদের ওস্তাদ। তাঁর মৃত্যুতে আমরা এতিম হয়েছি। তিনি বিশ্ববিখ্যাত আলেম ছিলেন। তিনি পুরো বিশ্বের ইসলামী চিন্তাবিদ। এতো বড় একজন ওস্তাদুল ওলামাকে হারিয়ে আমরা আজ অসহায়। তিনি শুধু পরিবারের মুরুব্বি ছিলেন তাই নয়, তিনি আমাদের সকলের মুরুব্বি ছিলেন। উনার তরিকা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করবো। মরহুম আল্লামা শাহ আহমদ শফি এবং তার পরিবারের জন্য দোয়া চেয়ে বাবুনগরী আরও বলেন, তাঁর মৃত্যুতে ক্ষতি হয়েছে। তবে সাংবাদিকরা আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন, এই ক্ষতি পূরণ হবে না? আমি উত্তর দিয়েছি, এই ক্ষতি ১০০% পূরণ হয়ে যাবে। আমরা যদি উনার তরিকা অনুযায়ী চলি। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুণ। তাঁর পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দিন।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রেস ব্রিফিং- হেফাজত ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর পর পরবর্তী আমির কে হবেন তা কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে জানিয়েছেন সংগঠনটির হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। শুক্রবার মধ্য রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমনটি জানিয়েছেন তিনি। হাটহাজারী মাদরাসার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে বলেও জানান তিনি। আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর সংগঠনের কার্যক্রমে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, প্রভাবতো কিছু হবেই। ওনার মতো তো আর মানুষ পাওয়া যাবে না। আমার দায়িত্ব হলো এখন কাউন্সিল ডাকা। কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নেবে ওটাই হবে।
জানাযায় শরীক হয়েছেন জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ও সাবেক এমপি জননেতা অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, হাজার হাজার ওলামা মাশায়েখদের উস্তাদ, বিশ্ব বরেণ্য আলেমেদ্বীন আল্লামা আহমদ শফীকে হারিয়ে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। আমরা তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। আমরা তাঁর অসমাপ্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য ওলামায়ে কেরামদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাত দান করেন সেই দোয়া কামনা করছি। ১৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী মাদ্রাসা) প্রধান ফটকে দুপুর ১ টায় জানাযাপূর্ব জাতীয়, স্থানীয় ও প্রিন্ট মিড়িয়া এবং ইলেকট্রনিক মিড়িয়া সাংবাদিক এবং জানাযায় সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। উক্ত নামাজের জানাযায় অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল সালাউদ্দীন আইয়ুবী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আমীরুজ্জামান চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি জননেতা আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটরী এস.এম. লুৎফর রহমন, নগর উত্তর শিবিরের সভাপতি হাসান ইলাহী, চবি শিবিরের সভাপতি শরীফ উদ্দীন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াত নেতা অধ্যাপক রবিউল হোসাইন, সাবেক শিবির নেতা ও জামায়াত নেতা আলাউদ্দীন, জামায়াত নেতা ফজলুল করিম, ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম পূর্ব জেলা সভাপতি আলাউদ্দীন, শিবির নেতা জোবায়ের ও সাইফুদ্দীন খালেদ প্রমুখ।
তথ্যমন্ত্রীর ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন মহলের শোক: দেশের কওমি মাদ্রাসা সমূহের শীর্ষ সংগঠন আল হাইয়াতুল উলাইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া, বেফাকুল মাদারিস, বাংলাদেশ ও হেফাজত-ই-ইসলাম সংগঠনের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ইন্তেকালে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। তথ্যমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। ড. হাছান মাহমুদ তার শোকবার্তায় প্রয়াত আল্লামা শফীকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে-দ্বীন হিসেবে উল্লেখ করেন এবং চট্টগ্রামের একই উপজেলা রাঙ্গুনিয়ার সন্তান হিসেবে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানান। মন্ত্রী বলেন, মাওলানা আল্লামা শফী দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে প্রাচীন ও বৃহত্তম চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশে ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ও স্বীকৃতি অর্জনে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
মহানগর বিএনপি’র শোক : উপমহাদেশের আলেমকুলের শিরোমণি, হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল, শায়খুল হাদীস, খেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফির ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।এক শোক বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লামা শফি সাহেব একজন বিনয়ী ও সজ্জন মানুষ ছিলেন। তিনি ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে মসজিদ, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে দ্বীনের আলো জানিয়েছেন। দেশের এ দুর্যোগকালে উনার মতো একজন আলেমে দ্বীনের বড় প্রয়োজন ছিল। তার মৃত্যুতে ইসলাম ও বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অপূরণীয় ক্ষতি। যা সহজে পূরণ হবার নয়। নেতৃবৃন্দ মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবার, উনার ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াত নেতৃবৃন্দের শোক : চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ঐতিহ্যবাহী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসা তথা হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামীম (মহাপরিচালক), প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এক যৌথ শোকবাণী প্রদান করেন। শোকবাণীতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের হাজার হাজার আলেমদের উস্তাদ আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালে জাতি এক অসামান্য অভিভাবককে হারাল।তিনি ছিলেন হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার কর্ণধার এবং ইসলামপ্রিয় মানুষের কাণ্ডারী। জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতির এই ক্রান্তিকালে একে একে আমাদের অভিভাবকদের মৃত্যুতে গভীরভাবে ব্যথিত করছে। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। তাঁর রেখে যাওয়া জিম্মাদারী পালনে সকলকে এগিয়ে আসার আহব্বান জানচ্ছি।মহান আল্লাহ যেন তার পরিবারের সদস্যদের সবরে জামিল ইখতিয়ার করার এবং হাটহাজারী মাদরাসার গৌরব উঁচু করে রাখার তৌফিক দান করেন।
মেয়রপ্রার্থী রেজাউল করিমের শোক: হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। রেজাউল করিম চৌধুরী তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী: শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের খান ও সেক্রেটারি এস এম লুৎফর রহমান এক যৌথ শোক বিবৃতিতে বলেন, অসংখ্য আলেমের উস্তাদ ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেবের ইন্তেকাল আমাদের জন্য অত্যন্ত শোকাবহ। তিনি অসংখ্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময় ধরে খেদমত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর উত্তম কাজগুলোকে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে কবুল করুন। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, ছাত্র ও অনুরক্তদের সবরে জামিল দান করুন।
সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল: হেফাজত ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে তাঁরা এ শোক জানিয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আতাউর রহমানের পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফী হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমিরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং দারুল উলুম মঈনুল ইসলামের মুহতামিম ছিলেন। এই প্রবীণ আলেমের মৃত্যুতে শুধু মুসলিম উম্মাহরই নয়, পুরো দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যা কখনও পূরণ হবার নয়। তারা তাঁর শোকশন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এদিকে গণমাধ্যম পাঠানো শোকবার্তায় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফি ইসলামী শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। পাশাপাশি কওমি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নেও ভূমিকা রেখেছেন।’ শিক্ষা উপমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
চিটাগাং চেম্বারের শোক প্রকাশ: আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালকমণ্ডলীর পক্ষে সভাপতি মাহবুবুল আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর হাজ্জাজ ও সহ-সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। চেম্বার প্রেসিডিয়াম মরহুমের শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বলেন-আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে ইসলাম ধর্মের একজন অগ্রগণ্য মুরব্বী হিসেবে সমাদৃত ছিলেন। চট্টগ্রামবাসী তথা দেশ একজন পথ প্রদর্শককে হারিয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে যে শোক ও শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা যাতে তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ অসংখ্য ছাত্র, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীরা সহ্য করতে পারেন তার জন্য পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার রহমত কামনা করেন।