
প্রভাতী ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালানো করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাংলাদেশেও চলছে। প্রতিদিনই চলছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী ধারা জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে থাকবে বলে ধারণা করছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। তারপর ধীরে ধীরে সংক্রমণের হার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ নামতে পারে সহনীয় পর্যায়ে।
তবে জাতীয় পরামর্শক কমিটি বলছে, সংক্রমণের শীর্ষবিন্দুতে এখনো পৌঁছেনি দেশ। তাই জুনের প্রথম দুই-তিন সপ্তাহ কড়াকড়িভাবে বিধি-নিষেধ নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী এখনো সংক্রমণের ঝুঁকিতে পুরো দেশ।
আইইডিসিআরের প্রাথমিক প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, জুনের প্রথম সপ্তাহে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার কমে আসার কথা ছিল। কিন্তু একের পর এক ভুলে সংক্রমণ তো কমেইনি বরং ঊর্ধ্বমুখী।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, হঠাৎ করে বলা হলো অফিস, গার্মেন্টস খুলে দেয়া হবে সবাই ঢাকা চলে আসো। তখন একদল লোক ঢাকায় চলে আসলো এবং পরদিন বেতন দিয়ে বলা হলো তোমরা বাড়ি চলে যাও। এভাবেই সারাদেশে করোনাটা ছড়িয়েছে। এরপর মার্কেট খুলে দিয়ে আরো ঝুঁকি বাড়ানো হলো।
জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, একটি ফেরির মধ্যে গাদাগাদি করে লোকজন বাড়ি গেল। এদের মধ্যে অনেকে উপসর্গ ছাড়াই কোভিড পজিটিভ ছিল, যারা গ্রামে গিয়ে সবার সাথে মিশেছে। এর ফলে এটি খুব দ্রুতই গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে টানা ছেষট্টি দিনের সাধারণ ছুটি শেষ হচ্ছে ৩০শে মে। পরদিন খুলছে অফিস-আদালত। এই পরিস্থিতি বিবেচনায় সংক্রমণ নিয়ে নতুন আরেকটি প্রক্ষেপণ তৈরি করেছে আইইডিসিআর। সে-অনুযায়ী, জুলাইয়ের শেষ দিকে সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসতে পারে সংক্রমণ।
আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর বলেন, আমাদের হিসেব মতে জুনের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এখন যেমন করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে তেমনই থাকবে। এটি সহজে স্বাভাবিক হবে না, তবে জুলাইয়ের শেষের দিকে সহনীয় পর্যায়ে আসতে পারে।
অবশ্য জাতীয় টেকিনিক্যাল পরামর্শক কমিটি বলছে, সংক্রমণের শীর্ষবিন্দুর দেখা মেলেনি এখনো। তাই জুনে কড়াকড়িভাবে বিধি-নিষেধ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।
তবে সংক্রমণ ঠেকাতে বিধি-নিষেধ নিশ্চিত করার ওপরই নির্ভর করে যথাযথ প্রক্ষেপণ। তাই শারীরিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেন বিশেষজ্ঞরা।