শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ১৪ই জুন ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জিলহজ ১৪৪৬ হিজরি

ঈদের ছুটিতে গ্রামমূখী মানুষের ঢল- চরম ঝুঁকিতে গ্রামের মানুষ !

প্রভাতী ডেস্ক : মহামারির শুরুর দিকে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস।বর্তমানে বাংলাদেশের সকল জায়গা করোনা ভাইরাস দখল করেছে।আক্রান্তের পাশাপাশি মৃতের হার বাড়তেছে পাল্লা দিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছুদিন কড়াকড়ির পর ঈদে ঘরমুখী মানুষকে নিজ পরিবহন নিয়ে যাতায়াতের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে আগের চেয়ে শীথিলতা লক্ষ্যণীয়। চলমান পরিস্থিতিতে গ্রামগুলোতে করোনারোগী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যারা ঈদে বাড়িতে যেতে চান, পুলিশ যেন তাদের চলাচলে বাধা না দেয়। তারা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।

এদিকে ১৭ মে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে ঢাকায় ঢুকতে বা বের হতে না পারেন, সে বিষয়ে নিরাপত্তাচৌকি জোরদার করতে নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। নির্দেশনা পেয়ে ওই দিন দুপুর থেকে পুলিশ কড়াকড়ি আরোপ করে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ঈদে যাতে নিজ অবস্থান ছেড়ে কেউ গ্রামের বাড়ি না যেতে পারেন, সে ব্যাপারে বিভিন্ন জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। এরপর বৃহস্পতিবার বলা হয়, গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, তবে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কেউ চাইলে যেতে পারবেন। বৃহস্পতিবার পুলিশের এই ঘোষণার পর থেকে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নামে সড়কে।

সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কেউ আক্রান্ত বা করোনার উপসর্গ দেখতে পেলে বাড়ি যেতে উৎসুক হয়ে ওঠেন। একাধিক রোগীর সাথে কথা বলে তাদের বাড়িতে ফেরার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। তবে, অনেকে গ্রামে পরিবারের কাছে নিজেকে নিরাপদ মনে করলেও এ পরিস্থিতে নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে উপসর্গ থাকা লোকেদের এবং যাদের প্রয়োজন নেই তাদের গ্রামে যাওয়া উচিত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুসারে জানা যায়, গ্রাম্য অঞ্চলগুলোতে ঈদে মানুষ ঘরে ফিরলেও স্থানীয় যুবকরা নিজ উদ্যোগে দলবদ্ধ হয়ে ঢাকা বা অন্য জেলা থেকে ফেরা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করছেন। অনেক সময় এ ধরনের লোকদের স্কুলঘর বা সাইক্লোন সেল্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় রাখা হচ্ছে।

বিবিসির বাংলার ২২ মে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিদিন যত টেস্ট করা হচ্ছে তার মধ্যে অন্তত ১৫ শতাংশের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। এখন বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের চূড়ান্ত ধাক্কা আসতে পারে জুন অথবা জুলাই মাসে। অথচ এরই মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৪ শত ছাড়িয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এ সময়টিতে বাংলাদেশের সমাজের একটি অংশের অমানবিক আচরণ অনেকেই লক্ষ্য করেছে। আক্রান্ত কিংবা মৃত ব্যক্তির পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় হতে হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। আক্রান্ত ব্যক্তিকে একঘরে করে দেয়া কিংবা বাড়ি ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগও উঠেছে। এর ফলে অনেকের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ থাকলেও তারা টেস্ট করাতে যাননি। তাদের মনে ভয় তৈরি হয়েছে যে রিপোর্ট পজিটিভ হলে হয়তো বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।

এতো কিছুর পর মানুষ গ্রামে গিয়ে পরিবারের সাথে সময় কাটানোয় খারাপ কিছু ফল আসতে পারে বলে সতর্ক করে বিশেষজ্ঞরা এতো তাড়াতাড়ি চলাচলে ছাড় না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print