প্রভাতী ডেস্ক : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বৃহস্পতিবার(২১ই মে) রডবাহী ট্রাক উল্টে নিহত ১৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ২জন পোশাক কারখানার শ্রমিক, ২জন পলিথিন ফ্যাক্টরির শ্রমিক, কেয়ার টেকারের কাজ করতেন ২জন এবং বাকিরা ছিলেন দিনমজুর। বৃহস্পতিবার রাতেই নিহতদের লাশ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
এদিকে এই মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক। ওই কমিটির আহ্বায়ক গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জেবুন নেছা, সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার (সি. সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান ও গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল কাদের জিলানী।
তদন্তকালে আইন অমান্য করে ঢাকার গাজীপুর থেকে নিহতরা মালবাহী ট্রাকে কিভাবে এলো, দুর্ঘটনার কারণ এবং অন্য আনুসাঙ্গিক বিষয়ে তদন্ত পূর্বক আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে এই কমিটিকে বলা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, পলাশবাড়ী উপজেলা মহদীপুর ইউনিয়নের ছোট ভগবানপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে পোশাক শ্রমিক আব্দুল মোত্তালিব ওরফে মহসিন মিয়া (২৩), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর ষোলঘরিয়া গ্রামের আব্দুর রজ্জাকের ছেলে পোশাক শ্রমিক ইমরান মিয়া (২২), একই উপজেলার ডাসারপাড়া গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে পলিথিন ফ্যাক্টরির শ্রমিক আব্দুল হান্নান (১৮), একই গ্রামের মো. আনারুল ইসলামের ছেলে পলিথিন ফ্যাক্টরির শ্রমিক মনিরুল ইসলাম (২০), একই উপজেলার শানেরহাট বড় পাহাড়পুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে রিকশাচালক এরশাদ ওরফে রেলা (৩৫) এবং এরশাদ ওরফে রেলার ছেলে ওবায়দুল (৮) ও আকাশ (১৫), একই উপজেলার ধল্লাকান্দি গ্রামের ইছা খানের ছেলে কেয়ার টেকার আল-আমিন (১৭) ও ফুল মিয়ার ছেলে কেয়ার টেকার ইছাহাক খান (১৪), রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০), কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার করপোড়া গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে মিজানুর (২৭), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ঢোরাকান্দর গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শামছুল আলম (৬৫) ও শামছুল আলমের নাতি একই গ্রামের সুমন মিয়ার ছেলে সোয়াইব (৭)।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ট্রাকভর্তি ছিল লোহার রড। রডগুলোর ওপর ত্রিপলে ঢাকা ছিল এই ১৩ জন। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে নিহত এই ১৩ জনকেও ত্রিপাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। আর ট্রাকের পেছনে বাঁধা ছিল কিছু প্লাস্টিকের ফাঁকা ফলের খাঁচা।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল কাদের জিলানী বলেন, ট্রাকটি চট্টগাম থেকে লোহার রড নিয়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পরে এই ১৩ যাত্রীকে গাজীপুর থেকে ওই লোহার রডের ওপর উঠান। পথে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কের গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা শহরের অদুরে জুনদহ (দুবলাগাড়ি) এলাকায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে নিচু খালে উল্টে যায়। এসময় প্রবল বেগে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছিল।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, ট্রাকযোগে আসা ওই ১৩ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
