
চট্টগ্রামে বাসায় ঢুকে পেশাদার সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছেন এক চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। উক্ত হুমকিদাতা হলেন সুচক্রদন্ডী ইউনিয়নের সুজন বিশ্বাস। ৭ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রাত ৯টার দিকে নগরের সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালা পাড়ার লোকনাথ স্টোরের পাশের গলিস্থ বুলেট বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় এই ঘটনা ঘটে ।
এ ঘটনায় সাংবাদিক অরূপ চন্দ্র নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে সিএমপির সদরঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ১১/১০/২০২৫ তারিখের জিডি নম্বর -৫০৬।
সাংবাদিক অরূপ চন্দ্র বর্তমানে জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার স্পেশাল ক্রাইম রিপোর্টার এবং ডেইলি বাংলাদেশ ডায়েরির ডিস্ট্রিক্ট চীফ হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় ক্রাইম রিপোর্টার সোসাইটি এবং সাংবাদিক সংস্থার চট্টগ্রাম বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে অভিযুক্ত সুজন বিশ্বাস তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধরসহ যেকোনো ধরনের ক্ষতির হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া সরকারি কিছু জাল নথি তৈরি করে মিথ্যা মামলার হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় অনেকেই সাক্ষ্য দিবেন বলে তিনি জানান এবং আইনানুগ ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য জিডি করেন।
সাংবাদিক অরূপ চন্দ্র জানান, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে জাতীয় দৈনিক “বাংলাদেশ সমাচার” পত্রিকায় প্রকাশিত “আগ্রাবাদে চসিকের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে ব্যবহার করছেন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর থেকেই সুজন বিশ্বাস তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আগ্রাবাদের বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে, যেগুলো থেকে সুজন বিশ্বাস আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। এরপর থেকেই তিনি সাংবাদিক অরূপ চন্দ্রকে বারবার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিলেন।
সর্বশেষ রাতে সুজন বিশ্বাস দলবল নিয়ে অরূপ চন্দ্রের বাসায় ঢুকে তাকে হত্যার হুমকি দেন, ফলে তার বৃদ্ধ মা ও পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং তাকে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিযুক্ত সুজন বিশ্বাস নিজেকে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট ব্যক্তি ও এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। ওই কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় তিনি আগ্রাবাদ এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, ‘সুজন বাহিনীর চাঁদাবাজিতে আগ্রাবাদের ফুটপাত ও অলিগলির দোকানদাররা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল।
৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন এলে এই চাঁদাবাজ নিজেকে ‘মহা বিপ্লবী নেতা’ হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা করছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিনি জামায়াতের কিছু নেতার নাম ব্যবহার করে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এবং সাংবাদিকের বাসায় ঢুকে ভীতি সৃষ্টি, নগদ অর্থ দাবি ও সরকারি নথি জাল করে মামলা ও হামলার হুমকি দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখাচ্ছেন ।
এই ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ এমনকি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন,এবং অভিযুক্ত সুজন বিশ্বাসকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও সাংবাদিক অরূপ চন্দ্র ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।