Search

রবিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রবিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ রবিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

জমি হস্তান্তরের পর নামজারি ও খাজনা হালনাগাদ বাধ্যতামূলক

৩ বছর খাজনা না দিলে জমি হবে খাস ও বাজেয়াপ্ত

জাল কাগজে জমি দখলের চেষ্টা করলে ২ বছর জেল বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা

টানা ৩ বছর খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) না দিলে সেই জমি সরকারের খাস খতিয়ানে যুক্ত হবে। এমন বিধান যুক্ত হচ্ছে নতুন ‘ভূমি মালিকানা ও ব্যবহার আইন, ২০২৪’-এর খসড়ায়। ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনতেই এ উদ্যোগ।

ভূমি মালিকদের জন্য যা যা আসছে নতুন আইনে-

ভূমি মালিকানা সনদ ও স্মার্ট কার্ড:

প্রত্যেক জমির মালিককে একটি ‘সার্টিফিকেট অব ল্যান্ড ওনারশিপ (সিএলও)’ বা ভূমি স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। এটি থাকবে ইউনিক নম্বর ও কিউআর কোডসহ, যা জমির মালিকানার চূড়ান্ত দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। খাজনা পরিশোধসহ সব ধরনের জমি লেনদেন এই সনদ অনুযায়ী চলবে।

খাজনা না দিলে জমি বাজেয়াপ্ত:

একটানা তিন অর্থবছর খাজনা পরিশোধ না করলে জমি খাস খতিয়ানে যুক্ত হয়ে যাবে, অর্থাৎ সরকার তা নিজের মালিকানায় নেবে। জমির মালিক তখন আর মালিক থাকবেন না।

অবৈধ দখলে শাস্তি:

জাল কাগজে জমি দখলের চেষ্টা করলে ২ বছর জেল বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা, বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

কৃষিজমির সুরক্ষা:

সরকার কোনো উন্নয়ন কাজের জন্য দুই বা তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না, যদি না মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি থাকে। অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জমির শ্রেণি পরিবর্তন:

সরকারের অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তবে এক বিঘা পর্যন্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি এর আওতামুক্ত থাকবে। নিয়ম ভাঙলে ১ বছর জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।

ডিজিটাল ম্যাপ ও স্যাটেলাইট ব্যবহার:

জমির ব্যবহার শনাক্তে স্যাটেলাইট চিত্রভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি মানচিত্র তৈরি করা হবে। এতে আবাসিক, বাণিজ্যিক, জলাভূমি, বন, কৃষি ও অন্যান্য শ্রেণির জমি আলাদা করে চিহ্নিত থাকবে।

নিয়মিত রেকর্ড হালনাগাদ:

জমি হস্তান্তরের পর নামজারি ও খাজনা হালনাগাদ বাধ্যতামূলক। মালিকানা পরিবর্তন হলে সিএলও সনদও হালনাগাদ করতে হবে, যার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি নেবে।

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজমির ওপর কোনো উন্নয়ন কর (খাজনা) দিতে হয় না। তবে, ১০ টাকায় দাখিলা সংগ্রহ করতে হবে, যা জমির মালিকানা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আইনটি কার্যকর হলে ভূমি জালিয়াতি কমবে, খাজনা আদায়ে শৃঙ্খলা আসবে, আর জমির মালিকরা হবেন আরও সচেতন। সরকারের দাবি, এটি হবে বাংলাদেশের ভূমি খাতে একটি যুগান্তকারী সংস্কার।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print