শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

আনন্দ উচ্ছ্বাসে সারাদেশে বই উৎসব সম্পন্ন , ছিল ঘাটতিও

প্রভাতী ডেস্ক : করোনা মহামারীর কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার সারাদেশে বছরের প্রথম দিন আনন্দ উচ্ছ্বাসে বই উৎসব চলছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা শীতের সকালে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা, মেতেছে উৎসবে। তবে অনেক এলাকায় নতুন বইয়ের ঘাটতি থাকায় পুরো সেট শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই সব শিক্ষার্থীদের হাতে সব নতুন বই তুলে দেওয়া হবে।

রাজবাড়ী‌: রাজবাড়ী‌তে আনন্দঘন পরিবেশে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে। রোববার (১ জানুয়ারি) সকা‌লে জেলার টাউন মক্তব সরকা‌রি প্রাথ‌মিক বিদ্যালয়ে জেলার ১৩‌টি প্রাথ‌মিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী‌দের হা‌তে নতুন বই তু‌লে দেওয়া হয়। এই কার্যক্রমের উদ্বোধন ক‌রেন রাজবাড়ী-১ আস‌নের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী।

এ সময় জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা, পু‌লিশ সুপার এমএম শা‌কিলুজ্জামানসহ অন্য কর্মকর্তারা।

বই উৎসবে সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় বড় বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে আমরা বছরের শুরুতে একটি ভালো কাজ করলাম। এতে শিক্ষার্থীরা আনন্দের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

নোয়াখালী :নোয়াখালীতে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার ২০০৩টি প্রাথমিক ও ৩১৩টি মাধ্যমিক এবং ২৭৫টি মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে চাহিদা পরিমাণ বই এখনও না পাওয়া যায়নি বলে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  তবে কয়েক দিনের মধ্যে সকল বিষয়ের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে পারবেন বলে আশা করছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা।  তবে মোট ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ নতুন বইয়ের।

রোববার (১ জানুয়ারি) দুপুরে চাটখিলের কড়িহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।

এসময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম জানান, জেলার ২০০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের চাহিদা ছিলো ১৭ লাখ ১২হাজার ৫৫৭ পিস। যার বিপরীতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা তিন লাখ নতুন বই হাতে পেয়েছি। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বই রয়েছে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সব বই এখনও হাতে এসে পৌঁছায়নি। প্রাথমিকভাবে পাওয়া বইগুলো ‘বই উৎসব’ এর মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমাদের চাহিদা মোতাবেক সকল বই হাতে আসবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে ।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে জেলার ৩১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৭৫টি মাদরাসায় আমাদের নতুন বইয়ের চাহিদা ছিলো ৫৪ লাখ ১৭ হাজার ৭৪৭ পিস। যার বিপরীতে আমরা নতুন বই সরবরাহ পেয়েছি ৩২ লাখ ৬৭ হাজার ২৮৫ পিস। বই উৎসবের মাধ্যমে পাওয়া বইগুলো উপজেলা থেকে বিদ্যালয় ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।  বাকি বইগুলো এলে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

নওগাঁ:

শীতের সকালে নওগাঁর শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে গেছে নতুন বই। এই বই উৎসবের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শিক্ষা ক্ষেত্রে মাইলফলক।

রোববার (১ জানুয়ারি) নওগাঁর পোরশার নিতপুর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ চত্বরে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

পোরশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াজেদ আলী মৃধাসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য এবার নওগাঁ জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে মোট লাখ ৩৬ লাখের বেশি বই দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৯ লাখ ২৬ হাজার ৩৬৫ নতুন বই।

নারায়ণগঞ্জ:

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকলেও এবার জমকালো আয়োজনের মধ্যে বই উৎসব উদযাপিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে।

রোববার নতুন বছরের প্রথম দিন জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক প্রায় ২৬৫টি স্কুলে তিন লাখ ১১ হাজারের অধিক নতুন বই শিক্ষার্থীদের উৎসবের মধ্য দিয়ে হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

সকালে নগরীর মাসদাইর এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি আজিজুল হকসহ শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা। পরে অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন। বছরের প্রথম দিনে বিনা মূল্যে বই হাতে পেয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

আজিজুল হক জানান, নারায়ণগঞ্জে চাহিদার বেশির ভাগ বই পেয়েছি। বইয়ের কোনো সঙ্কট নেই। সকল প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করা হয়েছে।

সিলেট:

সারাদেশের মতো সিলেটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে উদযাপন করা হয়েছে বই উৎসব। নতুন বই পেয়ে আনন্দ-উল্লাস ভাসে খুদে শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকালে সিলেট নগর ও জেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়। তবে বিভাগীয় কমিশনার জানান, সিলেট বিভাগের চার জেলায় ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৭৬ কপি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। তবে ছাপা শেষ না হওয়ায় সব বই এখনও পৌঁছায়নি সিলেটে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বই বিতরণ কার্যক্রম শতভাগ শেষ করা হবে।

নরসিংদী:

সারাদেশের মতো নরসিংদীতেও বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল বেলা ১২টায় শহরের ভেলানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবদুল্লাহ আল জাকি, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজিদ খান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী মোর্শেদ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি উচ্ছ্বাসিত অভিভাবকরাও।

প্রসঙ্গত, নরসিংদীতে এবছর প্রাথমিকে ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭০ সেট বই বরাদ্দ থাকলেও প্রথম ধাপে পেয়েছে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬৫২ সেট। মাধ্যমিকে ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ২৩৫ সেট বই বরাদ্দের বিপরীতে বই পেয়েছে ২৫ লাখ ৮১ হাজার ৯৫০।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে নরসিংদীতে মোট বই বিতরণ করা হয়েছে ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৬০২ সেট। বই পৌঁছায়নি বলে এখনও বাদ রয়েছে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৪০৩ সেট বই।

লক্ষ্মীপুর :

লক্ষ্মীপুরে নতুন বছরের প্রথম দিন বই উৎসব উদযাপিত হয়েছে। নতুন বই হাতে পেয়ে উৎফুল্ল শিক্ষার্থীরা। উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিশুদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে রামগঞ্জ  উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে  শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বছরের উপহার হিসেবে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে হাবিবা মীরা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোনাজের রশিদ,থানার অফিসার ইনচার্জ এমদাদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের  সাধারণ সম্পাদক, আ.ক.ম. আমিন ও রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর হোসেন পাটওয়ারী, বেলাল আহম্মেদ।

রাজশাহী:

গেলো দুই বছর করোনার কারণে উৎসবমুখর পরিবেশে বই বিতরণ সম্ভব না হলেও এ বছরের প্রথম দিনেই রাজশাহীতে চলছে বই বিতরণ উৎসব। রাজশাহীর আঞ্চলিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এবারে নগরীর অগ্রণী স্কুলে বই উৎসবের আয়োজন করা হয়।

রোববার সকালে অগ্রণী স্কুলের শিক্ষার্থীদের বই  মধ্যদিয়ে এ উৎসবে সূচনা হয়। শীত কুয়াশা উপেক্ষা করে নতুন বই পেতে সকাল থেকেই অভিভাবকদের সাথে নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলসহ অতিথিরা।

তবে এখন পর্যন্ত শতভাগ বই  না আসায় এ বছর প্রথমদিন  সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন সব বই তুলে দেয়া সম্ভব হবেনা। জেলা শিক্ষা অফিস তথ্যমতে, রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোতে ১৩ লাখ ১৭ হাজার বইয়ের চাহিদার বিপরীতে শনিবার পর্যন্ত বই  পৌছায় ৯ লাখ ৬৮ হাজার ৫০৪টি। অন্যদিকে মাধ্যমিকে ৪৫ লাখ ১৮টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া গেছে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৯ বই।

রাজশাহী জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২৪৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী প্রায় ৩ লাখ ২২ হাজার ৮১৫। প্রাক-প্রাথমিকে ২৬৩৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী প্রায় ৬ লাখ ২৮ হাজার।

বগুড়া:

বগুড়ায় বছরের প্রথম দিনে শিশুদের হাত নতুন বই তুলে দেয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

বগুড়া শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিতরণ করেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর ডাক্তার শামীম চৌধুরী ৷ অন্যদের মধ্যে ছিলেন- প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনসহ অন্যরা।

বগুড়া জেলায় ১৬০১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৯ হাজার ৯১৩১ জন শিক্ষার্থী এবং কিন্ডার গার্টেন ও অনান্য মিলে ৪১৯ প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী ১৭ হাজার ৯৭৬১ জন। জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবার  ২০ লাখ ২ হাজার ২১২টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই বরাদ্দ হয়েছে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮৮৯ টি। যার শতকরা প্রাপ্তির হার ৬৯ ভাগ।

অন্যদিকে বগুড়ায় মোট মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ৪৩৮টি। এর মধ্যে মাদরাসা ৩০৯টি,

দাখিল ভোকেশনাল ও এসএসসি ভোকেশনাল ট্রেড, ইবতেতায়ী স্তর ,দাখিল স্তর, মাধ্যমিক বাংলা ভার্সন স্তর, এসএসসি ভোকেশনালসহ সাতটি ৷ মোট শিক্ষার্থী ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৭ জন।

পাঠ্য পুস্তকের মোট চাহিদা ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩৪টি ৷ তার মধ্যে বই পেয়েছেন ৩০ লাখ ৯ হাজার ৭০০ জন ৷ বই পাওয়ার হার প্রায় ৫৬ শতাংশ ৷

নড়াইল:

নড়াইলে বই উৎসবে নতুন বইয়ের সঙ্গে জাতীয় পতাকা বিতরণ করা হয়েছে।  নড়াইল শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক কোমলমতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।

রোববার দুপুরে নড়াইল সদরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলামের সভাপতিত্বে পতাকা বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌর মেয়র আনজুমান আরা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা তবিবর রহমান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই ও একটি করে জাতীয় পতাকা বিতরণ করা হয়। বছরে প্রথম দিনে নতুন বইয়ের সঙ্গে পতাকা পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা।

পাবনা:

পাবনায় উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে বই উৎসব। সকালে ঐতিহ্যবাহী পাবনা জিলা স্কুলে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে এ উৎসবরে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন। বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থী ও অভিবাককরা।

এছাড়াও আজ পাবনার সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, স্কয়ার কিন্ডার গার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সহ জেলার এক হাজার ১৩৭টি প্রাথমিক ও ৫২১টি মাদরাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৯ লাখ ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বিতরণ করা হবে ৫০ লাখ ৭০ হাজার নতুন বই।

হবিগঞ্জ:

হবিগঞ্জে জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার দুপুরে স্থানীয় কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান।

জেলার ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৬ জন শিক্ষার্থী চলতি বছর পাচ্ছে ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৭৪২টি নতুন বই। এরই মধ্যে জেলায় বই পৌঁছেছে প্রায় ১৫ লাখ।

এছাড়া মাধ্যমিক, দাখিল, এবতেদায়ি, ইংরেজি ভার্সন, এসএসসি ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল ও কারিগরি ট্রেড মিলিয়ে হবিগঞ্জে বই বিতরণ করা হচ্ছে ৩১ লাখ দুই হাজার ৬৭৯টি।

সাতক্ষীরা:

শীতের কুয়াশা মাখা সকালে সাতক্ষীরায় প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণ করা হয়েছে।

রোববার সকালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনের আয়োজনে সিলভার জুবিলী মডেল বিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলেন দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। বই বিতরণে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমীন করিমী, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু হেনা মোস্তফা, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল গনি প্রমুখ।

সাতক্ষীরা জেলায় প্রাথমিক ২ লাখ ৮৮৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ লাখ ৩৩ হাজার

৫৫৮টি বই বিতরণ করা হবে।  এদিন সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্য পুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। জেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার বই বিতরণ করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁপাইনবাবগঞ্জের  কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। সকালে নবাবগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক একে এম গালিভ খান।

এর আগে বই উৎসবে যোগ দিতে  সকাল থেকে বিদ্যালয়ে আসতে থাকেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা।

জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক পাঁচটি উপজেলার  ৪৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২ লাখ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ লাখ ৩৪ হাজার বই বিতরণ করা হবে।

অন্যদিকে প্রাথমিকে ৭০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ লাখের বেশি বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের  পরিসংখ্যান দিতে পারেনি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।

কুষ্টিয়া:

নতুন বছরের প্রথম দিনে উৎসবমুখর পরিবেশে সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় প্রায় ৭৩ হাজার ৩৫ শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টায় কুমারখালী বালিকা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডল। এসময় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সারসহ অন্যারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন বছরের প্রথম দিনে উপজেলার ৩৫৬ টি সরকারি – বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদরাসার ৭৩ হাজার ৩৫ জন শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়েছে।

মেহেরপুর :

মেহেরপুরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে বই উৎসব। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় মুজিবনগর উপজেলার রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান।

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিবেশ বিশ্বাস, জেলা শিক্ষা অফিসার ভূপেশ চন্দ্র রায়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন।

এদিকে বই উৎসব শুরু হলেও পুরো বই পাননি ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রাথমিক পর্যায়ে মিলেছে বাংলা ও ইংরাজির বই। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মিলেছে একটি করে বই। আবার কোথাও কোথাও ষষ্ট শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা বইই পায়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

আজ একটি করে বই দিলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে বই পৌঁছে যাবে বলে দাবি শিক্ষকদের। অন্যদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের দাবি ৭৫ ভাগ বই জেলায় পৌঁছে গেছে। বাকি বই দুই একদিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে।

জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান বলেছেন, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা বই পেয়ে যাবেন।

রাঙ্গামাটি:

নতুন বছরের প্রথমদিনেই সারা দেশের ন্যায় পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি প্রাথমিক স্কুলগুলোতেও বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। পহেলা জানুয়ারি সকালে নতুন বছরের প্রথমদিনে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

রোববার সকালে জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বই বিতরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলা প্রশাসক।

এসময় রাঙ্গামাটির জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মৃদুল ক্রান্তি তালুকদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাসরিন সুলতানাসহ শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

নতুন বছরের প্রথমদিনে  রাঙ্গামাটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজ নিজ উদ্যোগে আয়োজিত পাঠ্য পুস্তক উৎসবে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীদের মনে খুশির বন্যা বয়ে যায়।

শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, রাঙ্গামাটির ১০ উপজেলায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৮৯ হাজার ১৫০ জন শিক্ষার্থী, ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৫২৯ বই পাবে এবং জেলার ১০ উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ে ১৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সর্বমোট ৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৫১টি বই বিতরণ করা হবে।

অপরদিকে, পাহাড়ে এ বছর প্রাথমিক পর্যায়ে শিশু শ্রেণি ও প্রথম শ্রেণির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৬৭ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে মাতৃভাষায় রচিত বই তুলে দেওয়া হয়। এতে করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বইয়ের মধ্যে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ভাষায় রচিত বইগুলো আকর্ষণীয় হওয়ায় শিশুরা পড়ালেখায় অনেক আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে বই উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। রোববার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদরের ঠাকুরছড়া গোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এ বই উৎসব উদযাপন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু।

বছরের প্রথম দিনে বই পেয়ে খুশি শিশুরা। তবে এ বছর খাগড়াছড়িতে  প্রাথমিকে চাহিদার তুলনায় বই এসেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তাই বছরের শুরুতে সব শিশুকে শতভাগ বই দেয়া যাচ্ছেনা। ফলে এ বছর কোমলমতি শিশুদের সকলের হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছেনা।

শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় ৫৯৩টি সরকারিসহ মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৭৯টি। তার অনুকূলে ২০২৩ সালে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের চাহিদা ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৬৯২টি। তার মধ্যে বই এসেছে মাত্র ২ লাখের কিছু বেশি। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার সকল বই এসেছে। এদিকে খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের হাতে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বই বিতরণ করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া  খাগড়াছড়ি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ জেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ করা হয়েছে।

লালমনিরহাট:

লালমনিরহাটে চাহিদার অর্ধেক বই পাওয়ায় নতুন বছরের শুরুতে বই উৎসবে সকল শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাচ্ছেন না । তবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা শিক্ষা অফিসার জানিয়েছেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হবে। তবে যে সকল শিক্ষার্থীরা হাতে বই পেয়েছেন তারা আনন্দিত ও উৎসাহিত হয়েছেন । সেই সঙ্গে শিশুদের অভিভাবকরাও আনন্দিত হয়ে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

রংপুর:

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিনে বিভাগীয় নগরী রংপুরে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ উৎসব পালন করা হয়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে বই বিতরণ উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু জাফার। বিশেষ অতিথি ছিলেন- রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্র লেখা নাজনীন, পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুরের অধ্যাপক আব্দুল মতিনসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।

এদিন রংপুর জেলার ৩ হাজার ১৩৫ টি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের  ৯ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে  প্রায় ২ কোটি ৮১ লাখ ৭৮ হাজার বই  বিতরণ করা হয়। মোট ৪ লাখ শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫২ লাখ বই বিতরণ করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানায়। এদিকে নতুন বকই পেয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছে, নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার নতুন বই আমাদের লেখা পড়ায় নতুন মাত্রা যোগ করবে এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর  প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তার।

নেত্রকোনা:

সারা দশের ন্যায় নেত্রকোনাতেও বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নেত্রকোনা মডেল সরকারি প্রাথমিক  সরকারি বিদ্যালয়ে বই বিতরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস।

পরে সাড়ে ১১টায়  শহরের আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ে বই বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তিনি।

এছাড়া জেলার প্রতিটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একযোগে বই বিতরণ করা হয়েছে। নতুন বছরে নতুন বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা।

চট্টগ্রাম:

হাতে নতুন উপহার, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ। বছরের প্রথম দিন বই পেয়ে তাই আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতেছে চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রামের ডাক্তার খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা শিক্ষা অফিস ও চট্টগ্রাম মিউনিসিপাল মডেল হাই স্কুলে সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগে আয়োজন করা হয় পাঠ্যপুস্তক উৎসবের। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাজানো মঞ্চে শ্রেণী প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বইয়ের সেট। পরে প্রত্যেক শ্রেণীতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় বই।

নতুন বই, নতুন পড়া, নতুন সিলেবাস ভাবতেই আনন্দ লাগছে জানান বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। বই উৎসবে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান- আন্তর্জাতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কাগজের সংকটের কারণে সব বই বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে না পারলেও জানুয়ারির ২য় সপ্তাহের মধ্যেই সকলের হাতে পৌঁছে যাবে নতুন বই।

এবার চট্টগ্রামে প্রাথমিকে ৪৭ লাখ ৫২ হাজার বইয়ের মধ্যে বই এসেছে প্রায় ২৫ লাখ। অন্যদিকে মাধ্যমিকে ১ কোটি ৫৮ লাখ বইয়ের মধ্যে এসেছে ১ কোটির বেশি বই।

পটুয়াখালী:

বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে খুশি পটুয়াখালীর শিক্ষার্থীরাও। সকাল থেকে স্কুল ক্যাম্পাসে ভিড় জমায় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী। আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় পাঠ্য বই। সবার হাতে বই তুলে দেয়া হলেও সব বিষয়ের বই বিতরণ সম্ভব হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে সব বিষয়ের বই হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হবে বলে জানালেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।

এদিকে বছরের প্রথম দিনেই হাতে বই পেয়ে খুশি শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে এক হাজার ২৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুই শতাধিক কেজিস্কুলসহ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫ ভাগ বই বিতরণ সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বখতিয়ার আহমেদ।

মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৯৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বছরের প্রথম দিনে বই বিতরণ করা হয় বলে জানান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান।

যশোর:

নতুন বছর নতুন ক্লাস, আর তার সঙ্গে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে উচ্ছ্বাসিত যশোরের শিক্ষার্থীরা। রোববার বছরের প্রথম দিন বই উৎসবে জেলায় ২০ লাখ ২৭ হাজার পিস বই বিতরণ করা হয়েছে। এদিন সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে এ বই উৎসবের সূচনা করেন। এ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮ লাখ ২৭ হাজার এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ১২ লাখ  বই বিতরণ করা হয়েছে। নতুন এ বই পেয়ে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ।

কুমিল্লা:

কুমিল্লায় নতুন বইয়ের সংকট নেই। সারাদেশের ন্যায় বই উৎসবে কুমিল্লা জেলার ১৭ উপজেলার সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক কোটি ২৬ লাখ ১২ হাজার ৫৪১টি নতুন বই বিতরণ করা হচ্ছে।

নগরের আওয়ারলেডী অব ফাতিমা গালস স্কুলে শিক্ষার্থীদের নতুন বই পেয়ে খুশিতে মুখরিত স্কুলের আঙ্গিনা।

নতুন শিক্ষাবর্ষ-২০২৩ এর পাঠ্যসূচি মোতাবেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ৬০৭টি ও মাদরাসার ৩৭৮টি মিলে সর্বমোট ৯৮৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার ৬১৩টি নতুন বই বিতরণ করা হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডার গার্ডেন সমূহে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ২৯ লাখ ২১ হাজার ৯২৮টি ।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইউনুস ফারুকী জানান, কুমিল্লায় নতুন বইয়ের সংকট নেই।৯৯ শতাংশ বই উপজেলায় চলে এসেছে। বাকিগুলোও লোড হয়েছে, আজ বিকেলের মধ্যে চলে আসবে। ২০১০সাল থেকে বাধা বিপত্তি ছাড়াই জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন বই বিতরণ করার হবে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হবে।

কুড়িগ্রাম:

নতুন বছরের প্রথম দিনে কুড়িগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো বই উৎসব। এতে বছরের প্রথম দিন নতুন বই পেয়ে খুশি ও উচ্ছসিত শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বই উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামসুল আলম। এসময়  সরকারি বালিকা ও বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবগণ উপস্থিত ছিলেন।

বই উৎসবে কুড়িগ্রাম জেলার ২৫৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২২৩টি মাদরাসার ৩ লাখ ২৩ হাজার ১৩২ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ৫২৫ টি নতুন বই তুলে দেয়া হবে। এছাড়া এ হাজার ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্ডেনসহ ২৩০টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ১শ৫টি বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

সোনারগাঁ:

ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পশ্চিম সনমান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে নববর্ষ পালন করলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ।

রোববার সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের তার নিজস্ব অর্থায়নে বই উৎসবের আমেজকে আরও উৎসবমুখর করতে নতুন বইয়ের সঙ্গে একটি করে স্কুল ব্যাগ বিতরণ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ জাহান, সভাপতি আনিসুর রহমান রাসেল।

জাহিদ হাসান জিন্নাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে বছরের প্রথম দিনেই শিশুদের হাতে বই তুলে দিয়েছেন। আমিও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান করে নিজস্ব অর্থায়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল ব্যাগ বিতরণ করেছি, যাতে করে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় উৎসাহ পায়।

নীলফামারী:

রোববার সকালে আলাদা দুই স্থানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে নতুন বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ।  প্রাথমিকের ৬৯ দশমিক ৫০ ভাগ এবং মাধ্যমিকে পাঁচ ভাগ বই ঘাটতি রেখে এ উৎসব উদযাপন করা হয়।

নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন বলেন, জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৩৮ হাজার ৭১৮ জন। এসব শির্ক্ষীর মধ্যে বই বিতরণ করা হবে ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬১৯ পিস। এ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৫০ ভাগ বই হাতে এসে পৌঁছেছে। আশা করি অবশিষ্ট বই চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পাবো।

শতভাগ বই হাতে না পাওয়ার কারণ হিসেবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বই ছাপানোর কাজে বিলম্ব করায় এমন বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি।

এদিকে নীলফামারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে দুই লাখ ৮৫ হাজার ১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ লাখ ১১ হাজার ১৫৪টি নতুন বই বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে ৯৫ ভাগ বই আমাদের হাতে এসে পৌঁচছে। অবশিষ্ট বই দুই একদিনের মধ্যে এসে পৌঁছবে বলে আশা করছি।’

সূত্র জানায়, জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মোট পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৭২৮ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে নতুন বই বিতরণ করা হবে ৪৫ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৩ পিস।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print