
মো: জিয়াউল হক: চট্টগ্রামের নতুন ব্রীজ (শাহ আমানত সেতু) থেকে পটিয়া শান্তির হাট পর্যন্ত যেই মিনিবাস গুলো যাতায়াত করে সেগুলোর এবং এই লাইনের বিআরটিসির কোন অনুমতি নেই। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এই লাইনে বাসগুলো যাতায়াত করে। শুধু অবৈধভাবে যাতায়াত করে তা নয় এই বাসগুলোও অবৈধ। মূলত হিউম্যান হলারের বডি পরিবর্তন করে এই মিনিবাস গুলো তৈরী করা হয়েছে। এর ফলে শাহ আমানত সেতু কর্তৃপক্ষ তথা সরকার বিশাল অংকের একটি টোল/রাজস্ব হারাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নতুন ব্রীজ -পটিয়া পর্যন্ত যাতায়াতকারী এই মিনিবাসগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ। পূর্বে সড়কে যেই হিউম্যান হলারগুলো চলতো সেগুলোর ইঞ্জিন-চেসিস ঠিক রেখে বডি পরিবর্তন করে মিনিবাসে রূপান্তর করা হয়েছে। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ ভাড়ায় চালিত মাইক্রোবাস এবং হিউম্যান হলার(লেগুনার) জন্য “ছ” বর্ণ ব্যবহার করে আর মিনিবাসের জন্য “জ” বর্ণ ব্যবহার করে। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ গাড়ীতে “ছ” বর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে। আর বাকী ১৫ শতাংশ গাড়ীতে “জ” বর্ণ ব্যবহার করা হয়েছে। এই ১৫ শতাংশ গাড়ী অনেকসময় কক্সবাজার পর্যন্ত যাতায়াত করে। এই ১৫ শতাংশের বৈধতা থাকলেও “ছ” বর্ণ ব্যবহৃত সব গাড়ী অবৈধ। শাহ আমানত সেতুতে হিউম্যান হলারের(লেগুনা) অর্থাৎ “ছ” বর্ণের গাড়ীর টোল ১০০ টাকা হলেও মিনিবাস অর্থাৎ “জ” বর্ণের গাড়ীর টোল ৫০ টাকা। সেই হিসেবে এইসব অবৈধ গাড়ীর কারণে নতুন ব্রীজ কর্তৃপক্ষ তথা সরকার প্রতিদিন অনেক বড় অংকের টোল হারাচ্ছে। তবে টোল সংগ্রহকারীরা গাড়ীর নম্বর দিয়ে টোল সংগ্রহ করলে কর্তৃপক্ষকে এই বিশাল অংকের টোল হারাতে হতো না।কিন্তু টোল সংগ্রহকারীরা অজানা কারণে গাড়ীর নম্বর অনুযায়ী টোল সংগ্রহ না করে গাড়ীর বডি দেখে টোল আদায় করেন।
এছাড়া মইজ্জারটেকে কোন গাড়ী পার্কিং না থাকলেও এই অবৈধ মিনিবাসগুলো দীর্ঘ পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করে। নতুন ব্রীজ এলাকায় যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে যানজট লেগে থাকলেও অজানা কারণে ট্রাফিক পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে।
জানা যায়, এনাম এবং জাফর নামের ২জন ব্যক্তি এই লাইনটি পরিচালনা করেন। প্রতি গাড়ী থেকে দৈনিক চাঁদা উঠিয়ে তারা বিভিন্ন দফতরকে ম্যানেজ…..
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ আমানত সেতুর টোল ম্যানেজার সুমন বলেন, আসলে গাড়ীর নম্বরপ্লেট দেখে টোল আদায়ের নিয়ম থাকলেও যানজট এড়াতে গাড়ীর বডি দেখে টোল আদায় করা হয়। তবে লেগুনাকে মিনিবাস করে তারা এত বড় জালিয়াতি করলো সেটা এতদিন আমাদের নলেজেও আসেনি। আমরা এটা নিয়ে দ্রুত অনুসন্ধান করে সত্যতা পেলে টোলের পরিমাণ লেগুনার মত ১০০ টাকাই নিব। তবে তাদের আন্দোলনের আশঙ্কাও রয়েছে। নিজের স্বার্থ হাসিল করতে তারা আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। এছাড়া বিআরটিএ এর কাছে ডাটাবেইজ চাইলেও দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদেরকে দিতে পারেন নি। সর্বোপরি টোল আদায় করতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার কথা স্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।
অবৈধ মিনিবাস সম্পর্কে জানতে চাইলে টি.আই মুকিত বলেন, লেগুনার ইঞ্জিনে বডি লাগিয়ে মিনিবাস করার বিষয়টি আমার নজরে ছিলো না। তবে ফিটনেস এবং ডকুমেন্টস এর সমস্যা থাকলে মামলা দেওয়া হয়। দৈনিক ১০-১২ টি মিনিবাস টো করার কথা জানান তিনি। এই রোডে প্রায় ৭০০ গাড়ী চললেও ১০-১২টি গাড়ী টো কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন জনবল সংকটের কারণে ইচ্ছে করলেও এর চাইতে বেশী গাড়ী টো করা সম্ভব হয় না।
একই বিষয়ে টিআই ফরহাদ বলেন, এই অবৈধ মিনিবাসগুলো নিয়ে আমরা তৎপর। প্রতিদিন অনেক গাড়ী টো করা হয়। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।