
প্রভাতী ডেস্ক: আগামী ৪৮ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জ্বর না এলে অনেকটা আশঙ্কামুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
তার জন্য গঠিত ৪ সদস্যের চিকিৎসক টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী বলেন, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে খালেদা জিয়ার কোনো জ্বর আসেনি। এটা খুবই ভালো লক্ষণ।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় রোববার(১৮ই এপ্রিল) খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তিনি এ কথা বলেন।
রাত সোয়া ৯টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তারা খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা দেখে ডা. এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, রোববার খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ১০ম দিন।
এ সময়টা করোনা রোগীর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বা বিপজ্জনক বলা হয়। এখন খালেদা জিয়া করোনার বিপজ্জনক সময় পার করছেন। তারপরও তার যে শরীরের অবস্থা তা মোটামুটি খুব ভালো। খালেদা জিয়া মানসিকভাবে খুবই শক্ত আছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৩দিন থেকে খালেদা জিয়ার সামান্য জ্বর ওঠানামা করছিল। আজ সারাদিন তার শরীরে কোনো জ্বর নেই। আগামী ৪৮ ঘণ্টা এ অবস্থা বিরাজ করলে বলতে পারব-আমরা একটা নিরাপদ জোনে চলে আসছি। আমরা তার শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছি। তার ব্লাড সুগারসহ অন্যান্য যেসব প্যারামিটার রয়েছে সেগুলো ঠিক আছে। তার কাশি নেই, গলা ব্যথা নেই। তার সবকিছু এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল আছে।
হাসপাতালে নেওয়া বা কোনো ধরনের পরীক্ষা করার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব পরীক্ষা করিয়েছি। তার সব রিপোর্টই ভালো এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা খালেদা জিয়া নির্দ্বিধায় আমাদের সঙ্গে কো-অপারেশন করছেন।
এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাকুর খান, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
রাত সাড়ে ৯টায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন টেকনোলজিস্ট খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজায় প্রবেশ করেন। তিনিও প্রায় দুই ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন। ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার পর প্রখ্যাত ‘বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের টিম গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু হয়।
‘ফিরোজা’র বাসায় বিএনপি চেয়ারপারসন ছাড়াও আরো ৮জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসাও সেখানে চলছে।
৭৫ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু পর পরিবারের আবেদনে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িক মুক্তি দেয়।
পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির সময় আরো ৬ মাস বাড়ায় সরকার। এ বছরের মার্চে ২য় বারের মতো ৬ মাসের মেয়াদ বাড়ানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া গুলশানে নিজের ভাড়া বাসা ফিরোজায় থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে বাইরের কারো যোগাযোগ সীমিত।