নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর বিএনপির নেতারা। কোনো রকম তদন্ত ছাড়া শাহাদাতকে গ্রেপ্তার করা রহস্যজনক বলেও দাবি করেছেন তারা। বৃহস্পতিবার (১লা এপ্রিল) বিকালে বিক্ষোভ সমাবেশে ‘হামলা’, ডা. শাহাদাতসহ ১৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও ‘মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা’র প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ আজিজ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আশা করব এই মামলাটির বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। আমরা মনে করি চট্টগ্রামে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমিয়ে রাখতেই এই প্রিয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ৩জনকে আসামি করে ডা. লুসি খান মামলা দায়ের করেছেন। মুজাফফর আহমেদ এবং ৩ নম্বর আসামি ফাতেমা জহুরা, যিনি মুজাফফরের স্ত্রী। এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২০ মার্চ শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে জনৈক ডা. লুসি খানের পরিচালিত এনজিওর মহাসচিবকে অপহরণ করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। বাদি লুসি খান বলছেন, গত ২০ মার্চ উনার এনজিওর অফিসে গিয়ে উনার সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। মুজাফফর আহমেদ প্রায় ২০ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। তার স্ত্রী ২০২০ সালে করোনা শুরুর আগে বাংলাদেশে আসেন এবং ১১ মার্চ ২০২১ থেকে মুজাফ্ফর আহমদ সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। যে লোক বাংলাদেশে নেই তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি এবং অপহরণের কথা বলা হচ্ছে।
বিরোধী দলে থাকলে রাজনৈতিক হয়রানি এবং একজন শিক্ষিত লোকের চরিত্রহনন বাংলাদেশে এখন কতটা সহজ হয়ে গেছে, সেটাই এ মামলায় প্রমাণিত।
তিনি বলেন, এজাহার অনুযায়ী লুসি খানের এনজিওর সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ এখনো নিখোঁজ। কিন্তু এই মহিউদ্দিনের সাথে লুসি খান প্রতিদিন তার ফিরিঙ্গী বাজারের ঘর থেকে বের হচ্ছেন। গত ২২ মার্চ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে, ছবি ও সিডি আমাদের কাছে আছে। যদি কারো এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা দিতে পারব।
এই চাঁদাবাজির নাটকটা কেন করা হলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শাহাদাত হোসেনকে কেন জড়ানো হল? আশ্চার্যের বিষয় হচ্ছে, একটা রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হবে, আর তার আগেই থানায় গিয়ে লুসি খান এজাহার লেখা শুরু করলেন। এজাহার লেখার সময় মামলার আসামিরা কে কোথায় সেটা জানেন না বাদী? কিন্তু পুলিশ ডা. শাহাদাতকে ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে আটক করেছে, যা মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু তাকে রাখা হয়েছে মনসুরাবাদ ডিবি অফিসে এবং চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কোতোয়ালী থানায় যে দুইটা মামলা হয়েছে, সেখানে বলা হল ডা. শাহাদাত পলাতক। তাকে এরেস্ট করল ডিবি, অথচ আদালতে পাঠানো ফরোয়ার্ডিংয়ে বলা হল তিনি পলাতক। কোতোয়ালী থানার দুই মামলার ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে, একটি সার্কিট হাউজের সামনে, আরেকটি নাসিমন ভবনের সামনে। একই লোক একবার সার্কিট হাউজে, আরেকবার নাসিমন ভবনের সামনে উপস্থিতি একই সময়ে দেখাচ্ছে? আবার গ্রেফতার করা হয়েছে একই সময়ে ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে। এটা কিভাবে সম্ভব প্রশ্ন তুলেন এই আইনজীবী ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, সদস্য এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুল আনোয়ার চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আজম উদ্দিন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আব্দুল মান্নান, বিএনপি নেতা এড. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, নূর মোহাম্মদ প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.