
প্রভাতী ডেস্ক : দেশের খ্যাতিমান কলামিস্ট, গবেষক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাঁর বাবা বাসায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। ওই অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি আগেই মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদের রচিত গ্রন্থ ৪০ টি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে—কবিতা: বিকেলবেলা, দারা শিকোহ ও অন্যান্য কবিতা; প্রবন্ধ: যুদ্ধ ও মানুষের মূর্খতা, বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, রবীন্দ্রনাথের ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন, ঢাকায় বুদ্ধদেব বসু প্রভৃতি; জীবনী: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জীবন ও সাহিত্য, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, গোবিন্দচন্দ্র দাসের ঘর-গেরস্থালি; ভ্রমণকাহিনি: জার্মানির জার্নাল, পারস্যের পত্রাবলি। চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি। সৈয়দ আবুল মকসুদ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ঋষিজ পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সৈয়দ আবুল মকসুদ ১৯৪৬ সালের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার এলাচিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ আবুল মাহমুদ ও মা সালেহা বেগম।
সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ বলেন, তাঁর বোন এ মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরতেছেন। তাঁর ফেরার পর বাবার দাফনসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী আলাদা শোকবার্তায় সৈয়দ আবুল মকসুদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
সৈয়দ আবুল মকসুদের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান শোক প্রকাশ করেন।
এছাড়া শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণফোরাম, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, ঐক্য ন্যাপ ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন।