
নিজস্ব প্রতিবেদক: দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির। তার মৃত্যু নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবদমান মির্জা কাদের- মিজানুর রহমান বাদল গ্রুপ রশি টানাটানি শুরু করছে। সাংবাদিক মুজাক্কির দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও অনলাইন পোর্টাল বার্তা বাজারের প্রতিনিধি ছিলেন।
সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। শনিবার (২০শে ফেব্রুয়ারী) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাই ফখরুদ্দিন।
শুক্রবার (১৯শে ফেব্রুয়ারী) বিকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনায় সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।
নিহত মুজাক্কির উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের নোয়াব আলী মাস্টারের ছেলে। তিনি নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করেন।
এদিকে সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যাকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপ রশি টানাটানি করছে। এ নিয়ে নোয়াখালী জেলা ও উপজেলা সমূহে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক সমাজ তীব্র ক্ষোভ, ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করেছে।
গণমাধ্যম কর্মীরা বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি করে সাংবাদিক মুজাক্কিরকে হত্যা করে তুষ্ট হয়নি। আওয়ামী নেতারা হত্যার শিকার তরুণ উদীয়মান সাংবাদিক মুজাক্কিরের লাশ নিয়ে ঘৃণ্য রাজনীতির খেলায় মেতেছে। হত্যাকারীরা এ হত্যাকাণ্ডের দায় একে অপরের ওপর ফেলছে। তারা বুঝাতে চাচ্ছেন, তাদের আধিপত্য, নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বের নগ্নতা প্রদর্শনের জন্য আরো লাশ চান। তারা চান আরো মায়ের বুক খালি হোক।
এ বিষয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ঘটনা প্রবাহের ওপর তীব্র দৃষ্টি রাখার ও পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান।
কোম্পানীগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা বলেন, মুজাক্কির হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত খুনিদের শনাক্ত করতে চাইলে প্রশাসনের উচিত ওইদিনের ঘটনার সময় চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারের থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে কারা বেআইনি অস্ত্র প্রদর্শন-ব্যবহার করেছে তা দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ সিসিটিভির ফুটেজ নিয়েও খুনিচক্র যেন কোন নাটকীয়তা করতে না পারে সে বিষয়ে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সাংবাদিক মুজাক্কিরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (পিআরও) মো. আবু নাছের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ শোক বার্তা গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবসহ উপজেলা এলাকার সকল প্রেস ক্লাব সমূহ, সাংবাদিক সংগঠন এবং কোম্পানীগঞ্জ প্রেস ক্লাব, সাংবাদিক সমিতি, সাংবাদিক ইউনিটি, সাংবাদিক ইউনিয়ন মুজাক্কির হত্যাকাণ্ডে খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি জানিয়েছে। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তার মৃত্যুতে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।