প্রভাতী ডেস্ক : আজ ১০ই মহররম রবিবার (৩০শে আগষ্ট) পবিত্র আশুরা, সরকারি ছুটি। আজকের দিনটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য নানান ধর্মীয় ঘটনাবলীর কারণে অন্যান্য ধর্ম বা আসমানী কিতাবের অনুসারীদের কাছেও এই দিনটি বিশেষভাবে মহিমান্বিত। এই দিনেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে বলে মুসলমানরা বিশ্বাসী।
এ দিন হজরত আদম (আ.) বেহেশত থেকে দুনিয়ায় আসেন এবং এ দিনই স্ত্রী হাওয়া (আ.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দানে তার সাক্ষাৎ ঘটে। এছাড়া হিজরি ৬১ সনের এদিনেই কারবালা প্রান্তরে ঐতিহাসিক কারবালা ট্র্যাজেডি বা প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইনে (রা.) এর শাহাদাতের মর্মান্তিক ঘটনা সংঘটিত হয়। ফলে কারবালার শোকাবহ ঘটনার ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবেও দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিনটি পালনে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর নির্দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তখন থেকেই আশুরার আগের দিন বা পরের দিন মিলিয়ে এ উপলক্ষে দুদিন রোজাসহ নফল ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকেন। প্রতিবছর কারবালার শোকাবহ ঘটনা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী তাজিয়া বা শোক মিছিল বের করা হলেও ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার তাজিয়া বা শোক মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে রাজধানীর হোসনি দালান এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে শোকানুষ্ঠান পালনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক সংক্ষিপ্ত আলোচনা দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিজরি ৬১ সনের মহররম মাসে হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীদের কারবালা প্রান্তরে এজিদ বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হন। তারা এজিদের অনুকূলে নবী দৌহিত্রের বাইয়্যাত বা আনুগত্যের বিনিময়ে নবী পরিবারকে ফোরাতের পানি সংগ্রহ ও মদিনায় ফিরে যাওয়ার শর্ত দেয়। কিন্তু ইসলামের সুমহান আদর্শের পতাকা সমুন্নত রাখতে ধর্মের একজন ইমাম হিসেবে মদ্যপ ও বেনামাজি ইয়াজিদের আনুগত্য স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান।
অবশেষে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে করতে এজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। ফলে দিনটি ধর্মীয় বিধি রক্ষায় মুসলমানদের ইমানী পরীক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.