প্রভাতী ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করার অভিযোগে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে ময়মনসিংহের ভালুকায় মো: ইমন নামে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বলছে, এই আইনটি ব্যবহার করা হচ্ছে ভিন্ন মতাবলম্বীদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে। প্রধানমন্ত্রী ও সিনিয়র অন্য রাজনৈতিক নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২০১৮ সাল থেকে এই আইনে কয়েক শত মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এ খবর দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি আরো লিখেছে, বুধবার (২৪শে জুন) ভালুকা পুলিশ বলেছে, ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা ও কাউন্সিলর তোফায়েল অভিযোগ করেছেন ওই বালকটি আমাদের মায়ের মতো নেত্রীর বিষয়ে খারাপ কথা বলেছে। তার এই অভিযোগের কারণে সপ্তাহান্তে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদ ইমনকে।
ফেসবুকে ওই বালক মোবাইল ফোনে নতুন করে ট্যাক্স আরোপ নিয়ে গত (১৯শে জুন) পোস্ট দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সেখান থেকে ৩৫ থেকে ২৫ টাকা কেটে নেয়া হয়। এখানেই সে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে অবমাননাকর বক্তব্য উপস্থাপন করেছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় কাউন্সিলর তোফায়েল আহমেদ ২০ শে জুন ওই মামলাটি করেন। তিনি বলেছেন, ওই বালকের আক্রমণাত্মক কথা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তার পিতা-মাতা সমর্থন করে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে। পুলিশ বলেছেন, পরে ফেসবুক থেকে বিতর্কিত ওই পোস্ট মুছে দিয়েছে ইমন। সে পরে আরেকটি পোস্টে মাফ চেয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ইমনকে তার ভুল সংশোধনের জন্য ভুলের বিষয়ে বুঝতে এবং চরিত্র সংশোধন করতে যে সময়ের প্রয়োজন হয়,সেই সময় পর্যন্ত তাকে সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে এই কিশোর গ্রেপ্তার। ভিন্ন মতাবলম্বীদের জন্য শাস্তির বৈধ হাতিয়ার এই আইন। এছাড়া মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে লঙ্ঘন করে এই আইন। অ্যামনেস্টির ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি বলেছেন, কেউ সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের সামান্য সমালোচনা করলেও তাদেরকে ক্রমবর্ধমানহারে টার্গেট করছে কর্তৃপক্ষ।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে করোনা ভাইরাস নিয়ে অনলাইনে মিথ্যা গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে এই ডিজিটাল নিরাডপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে ক্ষমতাসীন দলের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে উপহাস করার অভিযোগে একটি ইউনিভার্সিটির একজন প্রফেসর ও একজন লেকচারারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.