এম.জিয়াউল হক: চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় ভুয়া কাজী বা বিবাহ রেজিস্ট্রারদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক নোটারী পাবলিক করে বিবাহ রেজিস্ট্রি করতে আদালতে আসার সুবাদে এসব ভুয়া কাজীরা ফায়দা লুটার জন্য আদালত পাড়াকে বেছে নিয়েছে।
এমনই একজন দালাল হলো কথিত মৌলানা রাকিব বিন জিয়া। যে প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ টি বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এই কথিত কাজী আইনজীবী এনেক্স-১ ভবনের নীচ তলায় একটি কম্পিউটার দোকানকে অফিস হিসাবে ব্যবহার করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কথিত কাজী রাকিব ৩-৪ জন কাজীর বালাম ব্যবহার করে বিবাহ রেজিস্ট্রি করে। বিবাহ রেজিস্ট্রির পর বর/কনে পক্ষ কাবিননামা চাইলে কাবিননামা দিতে গড়িমসি করেন এবং কোন পক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা পেলে বিবাহ রেজিস্ট্রির বিষয় অস্বীকার করে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাবিননামা সরবরাহ, কাবিননামা পরিবর্তন, বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি, কাবিননামা গোপনসহ বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে থাকেন এই কথিত কাজী।
পাশ্ববর্তী কয়েকজন দোকানদার বলেন এই রাকিব হুজুর অনেক খারাপ লোক। বিবাহের কাবিননামা প্রদান না করার কারণে তাকে একবার কতগুলো মহিলা জুতা পেটা করেছিল। প্রতিনিয়ত তার সাথে কোন কোন লোকের সাথে ঝগড়া হয়।
বিধি বহির্ভূতভাবে আদালত অঙ্গনে কিভাবেই বিবাহ রেজিস্ট্রি করেন জানতে চাইলে প্রথমে এই কথিত কাজী ক্ষেপে যান। বিবাহ কোন কাজীর বালামে রেজিস্ট্রি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন ৪-৫ জন কাজীর বালাম নিয়ে কাজ করেন। কয়েকজন প্রভাবশালী আইনজীবী তাকে নির্ভয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন সাংবাদিকেরা আমার কি করবে? স্বয়ং জেলা রেজিস্ট্রারও আইনজীবীদের ভয় পান। যেসব আইনজীবী তাকে সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন তাদেরকে প্রতি মাসে মোটা অংকের মাসোহারা প্রদান করা হয় বলেও জানান রাকিব।
প্রতারক রাকিবের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা সুমন চৌধুরী বলেন, এই দালালদের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ। তাদের অভিযোগ গ্রহণ করতে করতে আমরা বিরক্ত হয়ে গেছি। তাদের কারণে লোকজন প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। দালালদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।