প্রভাতী ডেস্ক: দুই বছর প্রেমের পর বিয়ে। বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে ১১ বছর,৩ বছর বয়সী ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। তবুও নতুন করে প্রেমে মজে পরকিয়ায় জড়িয়ে এখন স্ত্রী সন্তানকেই ছুড়ে ফেলে দিলেন জজ স্বামী। এমনকি ফোন করে স্ত্রী সন্তানকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ওই জজ সাহেব। ২১নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা এগারটায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে কান্না জড়িৎ কন্ঠে অভিযোগ করেছেন ওই জজের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার লাবনী ।
সংবাদ সম্মেলনে লাবণীর বক্তব্য সূত্রে জানা যায়, নড়াইল জেলা জজ আদালতের সহকারি বিচারক(কালিয়া কোর্টের ) রহমাত আলী রাজু তার স্ত্রী ও একটি তিন বছরের কন্যা থাকা অবস্থায় ঢাকায় একজন ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরকিয়ার ওই নারীর নাম ইশিতা আক্তার তানিয়া, তারও রয়েছে ১১ বছরের একটি কন্যা সন্তান,তার স্বামী ঢাকার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। পরকিয়ায় পরার পর থেকে নিজ স্ত্রী ও সন্তানকে ভুলে যান এবং তাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগও রক্ষা করছেন না ,এমনকি স্ত্রী ও মেয়ের কোন খরচও দিচ্ছেন না জজ সাহেব ।
জজ'র স্ত্রী রাবেয়া আক্তার লাবনী বলেন, ২০০৬ সালে তার সাথে পরিচয় ,এর দু'বছর পরে ২০০৮ সালে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার মহেষপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের নওশের আলী শাহ এর ছোট পুত্র রহমত আলী রাজুর সাথে ইসলামী শরিয়ত মতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই । তখন রাজু অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র,তার পরিবার ছিল দরিদ্র,বিয়ের পর থেকে স্বামীর লেখা পড়ার খরচ,ভার্সিটিতে যাতায়াত খরচ,হাত খরচ এমনকি ঢাকার বাসা ভাড়া ও সাংসারিক খরচ বহন করতেন আমার বাবা। লেখাপড়া শেষে ঢাকা জজ কোর্টে শিক্ষানবীশ ল'ইয়ার হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। এরই মধ্যে রাজু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং আমিও প্রেগনেন্ট হই। তখন আমরা আমার বাবা মার কাছে খুলনাতে চলে যাই।
এরই মধ্যে আমার স্বামী রাজুর সুখবর আসে,তার নামে চিঠি আসে সহকারি জজ হিসাবে চাকুরীর । ২০১৮ সালের মার্চ মাস নড়াইল জেলার সহকারি জজ হিসাবে যোগদান করতে যাবার সময় নতুন জামা কাপড়, যাতায়াত খরচাদিসহ সব বহন করে তাকে খুলনা থেকে নড়াইলে পাঠায় আমার বাবা । অন্য দিকে আমিও ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তানের মা হই। বাচ্চা একটু বড় হলে আমি আমার স্বামী রাজুকে নড়াইলে বাসা নিতে বলি,তখন রাজু বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করে এবং ধীরে ধীরে আমাদের সাথে যোগাযোগ কমাতে থাকে। প্রায়ই ঢাকায় যায় ট্রেনিং এর কথা বলে , ৩-৪ মাস যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
এরপরে আমি চলতি বছরের এপ্রিলের ৭ তারিখ নড়াইল যাই ,সেখানে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এমনকি গায়েও হাত তোলে। এর অনেক দিন পর পুনঃরায় আমি নড়াইল গিয়ে জেলা জজ সাহেবের স্ত্রীর কাছে সব খুলে বলি এবং তিনি আমাকে সেই রাত থেকে যেতে বলেন। আমার কাছে থাকা ডমেনিটরির রুমের চাবি দিয়ে রাজুর বাসায় থাকার জন্য প্রবেশ করি এবং তার ব্যবহৃত পুর্বের মুঠোফোনটি আমি খুঁজে পাই, সেটি ওপেন করতেই এক নারীর বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির পিক- ভিডিও ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেখি,যা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা।
এসব দেখে আমি ওখানেই অজ্ঞান হয়ে যাই। রাজু আমাকে ওখানেও গালাগালসহ বিভিন্নভাবে লাঞ্চিত ও অপমান করেন।এমনকি গায়েও হাত তোলে। এরপরে ওখান থেকে আমি খুলনাতে চলে আসি।
আজ এক সপ্তাহ ধরে ঢাকায় অবস্থান করছি এবং রাজুর পরকিয়া প্রেমিকাকে খুঁজতে থাকি , অনেক খোঁজাখুজির পরে পরকিয়া প্রেমিকা ইশিতা আক্তার তানিয়ার খোঁজ পেয়ে যাই। জানতে পারি বাগেরহাট জেলার চিতলমারি থানার বড় বাড়িয়া গ্রামের মরহুম সোলেমান শিকদারের ছেলে বেল্লাল হোসেন শিকদার এর বড় মেয়ে এই ইশিতা আক্তার তানিয়া। তারা বর্তমানে উত্তরার আজমপুর দক্ষিনখান থানার অন্তর্গত ৫০ নং ওয়ার্ড মনির দেওয়ানের বাসায় ভাড়া থাকেন। ওখানে আমি তানিয়ার সাথে দেখা করে এসব বিষয়ে কথা বল্লে তানিয়া এবং তার মা- বাবা আমাকে মারার চেষ্টা করেন। আমি দক্ষিন খান থানায় এসব বিষয়ে মামলা বা সাধারন ডায়েরি করতে গেলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিকদার শামীম মামলা বা জিডি কোনটি নেননি।
সাংবাদিকদের কাছে কান্না জড়িত কন্ঠে রাবেয়া আক্তার লাবনী বলেন, আমি আমার স্বামীকে ফেরৎ চাই,আমার সন্তান যেনো তার বাবাকে বাবা ডাকতে পারে, প্লিজ হেল্প করুন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা,তিনি খুবই অসুস্থ। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই,তিনিও একজন মা। বাবা হারা হলে সন্তান কেমন থাকে তা প্রধানমন্ত্রীও জানেন,প্লিজ আমাকে বাঁচান। নচেৎ এই শিশু সন্তান নিয়ে আমার আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ থাকবে না।
অভিযোগের বিষয়ে সহকারি জজ রহমত আলী রাজু'র সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.