
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন শেখ হাসিনা। খবর বিবিসির।
রায়ের পর প্রকাশিত পাঁচ পৃষ্ঠার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তার দল আওয়ামী লীগকে বাতিল করার উপায় হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
ভারতে নির্বাসিত হাসিনা এর আগে এই বিচারকে ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি একটি যথাযথ ট্রাইব্যুনালে মুখোমুখি হতে ভয় পাই না, যেখানে প্রমাণগুলো ন্যায্যভাবে যাচাই করা যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি মানবাধিকার ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে তার সরকারের সাফলতার জন্য অত্যন্ত গর্বিত।’
সোমবার (১৭ নভেম্বর) পৌনে তিনটার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যাল-১-এর বিচারক বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৩টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। প্রথম অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও দ্বিতীয় অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যাল।
৬ ভাগে বিভক্ত ৪৫৩ পৃষ্ঠা রায়ের সার সংক্ষিপ্ত অংশ পড়েছেন বিচারক। দুপুর ১২টা ৩৪ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয়। পৌনে তিনটা পর্যন্ত রায়ের সার সংক্ষিপ্ত অংশ পড়েন বিচারক। পরে রায় ঘোষণা করেন।
শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ে আদালত বলেন, শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। একইসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হয়ে সত্য উন্মোচন করেছেন, মামুনের অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ হলেও সত্য উন্মোচন করায় তার সাজা কম হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.