
চট্টগ্রামে দুই লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় রাকিব হোসেন নামে এক যুবককে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও পরে হাসপাতালে মৃত্যুর ঘটনায় ওসিসহ ৯ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ হাসানুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগীর মা সাজু বেগম। আদালত শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। সাজু নগরের আকবর শাহ থানার বিশ্ব কলোনি এলাকার দিল মোহাম্মদের স্ত্রী।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আসাদুল আলম সালেক বলেন, আদালত মামলার শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে বলা রয়েছে, প্রথমে থানায় মামলা করতে হবে। তারপর তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। আমরা পুলিশ কমিশনারের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি। কারণ, একজন মানুষকে হেফাজতে নেওয়ার পর নির্যাতনের কারণে মৃত্যু হয়েছে।
মামলার আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে, চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার ওসি আরিফুর রহমান, এএসআই সাইফ উল্লাহ, কনস্টেবল সোহেল চাকমা, নুর মোহাম্মদ শাহাদাত, স্থানীয় জহুরল ইসলাম লিটন ওরফে ক্যাডার লিটন, রিপন, রুবেল, সুমন পারভেজ শিমু, বিপ্লব।
এজাহারসূত্রে জানা যায় , গত ১৬ অক্টোবর আকবর শাহ থানার সেভেন মার্কেটের জহুরল ইসলাম লিটন প্রকাশ ক্যাডার লিটনের টর্চার সেল অফিসে ভিকটিম রাকিবকে অপহরণ করে নিয়ে যান রিপন, রুবেল, সুমন পারভেজ শিমু, বিপ্লব। তারা রাকিবের মা-বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় প্রথমে তাঁকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। হুমকি দেয় টাকা না দিলে জেল খাটাবে, থানার সঙ্গে তাদের কনট্রাক্ট আছে। টাকা না পেয়ে পুলিশকে ডেকে এনে গাড়িতে তুলে দেয় তারা।
এজাহারে বলা হয়, রাকিবকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। ওসির নির্দেশে পুলিশ সদস্যরা থানার ভেতর আবার রাকিবকে মারধর করেন। ১৬ অক্টোবর নন এফআইআর মামলা দিয়ে আদালতে চালান করে পুলিশ। আদালতে রাকিবকে দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে পাঁচ দিনের জেল দেন। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে উপস্থাপনের সময় ভুক্তভোগীকে নির্যাতনের কথা উল্লেখ করেনি পুলিশ। আসামিদের নির্যাতনের কারণে ভুক্তভোগী কারাগারে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যান। গুরুতর অসুস্থ হলে গত ১৮ অক্টোবর তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ২১ অক্টোবর সেখানে তিনি মারা যান।
আকবর শাহ থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, পুলিশ সুস্থ অবস্থায় তাঁকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে আদালতে পাঠায়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। থানায় মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শেখ মুজিবের প্রশংসা করে বক্তব্য দেওয়ার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরেও তিনি বহাল তবিয়তে থাকায় সুশীল সমাজে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। পরে বায়েজিদ থানায় দায়িত্ব পালন করার সময় সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচিত হন এই বিতর্কিত ওসি আরিফুর রহমান।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.