কিডনি রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে সাহায্য করতে নয়, বরং আইফোন ও মোটরসাইকেল কেনার টাকার জন্যই ডাকাতি করতে ব্যাংকে ঢুকেছিল তিন যুবক। পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই কিশোর পাবে ১০ লাখ করে। আর বাকি টাকা নেবে অপরজন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে আত্মসমর্পণকারী ৩ জন।
পুলিশ জানায়, ব্যাংকে ডাকাতির জন্য ওই তিন যুবক অন্তত এক মাস আগে থেকে রেকি করা শুরু করে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় হামলা চালায় তারা। তবে ডাকাতির চেষ্টায় তারা সফল হতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাকাতির চেষ্টায় ব্যাংকে ঢুকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ব্যাংকের ভেতর অবরুদ্ধ থাকার পর আত্মসমর্পণ করে তিনজন। তাদের একজনের নাম লিয়ন মোল্লা ওরফে নীরব (২২)। অপর দুজনের বয়স ১৬। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় তাদের বিরুদ্ধে রূপালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মাহমুদ বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
গ্রেফতার ৩ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের ভেতরে থাকা অবস্থায় তিনজনের সঙ্গে একজন ব্যাংকের কর্মীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা বাইরে থেকে যোগাযোগ করি। তখন তারা বলেছিল, একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে সাহায্যের জন্য ডাকাতি করতে এসেছে। তাদের দীর্ষ সময় ধরে বুঝানোর পর আত্মসমর্পণে রাজি হয় এবং তাদের আমরা হেফাজতে নিই।
তিনি বলেন, সেসময় ব্যাংকের ভেতরে থাকা ১৬ জন গ্রাহক ও কর্মীকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনজনকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মূল পরিকল্পনার কথা তারা স্বীকার করেছে। কিডনি রোগীর জন্য নয়, আইফোন ও মোটরসাইকেল কেনার জন্য তারা এই ডাকাতির পরিকল্পনা করে।
থানার এ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ১ মাস থেকেই ডাকাতির জন্য তারা ব্যাংকের ভেতর ও আশপাশে রেকি করে। ঘটনার দিন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংকে ঢুকেই সিসি টিভির ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং হার্ডডিস্ক নষ্ট করে দেয়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাড়িটি কর্ডন করে রাখি। এক পর্যায়ে তারা আত্মসমর্পণ করে।
ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, গত ১ মাস থেকেই ডাকাতির জন্য তারা ব্যাংকের ভেতর ও আশপাশে রেকি করে। ঘটনার দিন পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংকে ঢুকেই সিসি টিভির ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং হার্ডডিস্ক নষ্ট করে দেয়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাড়িটি কর্ডন করে রাখি। এক পর্যায়ে তারা আত্মসমর্পণ করে।
নীরবের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে। ভাড়া থাকতেন কেরানীগঞ্জের কদমতলী খালপাড় এলাকায়। বাকি দুজন কদমতলী খালপাড় এলাকার। খেলার মাঠে তাদের সম্পর্ক তৈরি হয়। নীরব ব্যাংক ডাকাতির পরিকল্পনা করে দুই কিশোরকে পরে যুক্ত করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করে নীরবকে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। বাকি দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.