শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ৫ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৯ই মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম মিয়াকে ব্যবহার করেছে মাহাবুব - শাহানাজ চক্র

দেওয়ানহাটে ১৪৫ ধারার মামলায় জমি পরিমাপের সময় সার্ভেয়ারের সাথে বাদী পক্ষের দূর্ব্যবহার

সঠিকভাবে পরিমাপ হলে বাদীর দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হবে

চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটে ১৪৫ ধারার মামলায় জমি পরিমাপ করতে গেলে সার্ভেয়ার এবং বিবাদী পক্ষের সাথে বাদী পক্ষের দূর্ব্যবহার ও হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে দেওয়ানহাট মোড়স্থ আব্দুর রাজ্জাক সওদাগর বাড়ীর ইম্পালস প্রোপার্টিজ লি: এর নির্মাণাধীন ভবনের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

সার্ভেয়ারের দিকে তেড়ে আসেন মাহবুব

জানা যায়, ইম্পালস প্রোপার্টিজ লি: এর নির্মাণাধীন ভবনের অর্থাৎ আবুল কাশেম মিয়ার ওয়ারিশদের ভিটি ভূমিতে নিজের স্বত্ব রয়েছে দাবী করে গত ১৩/০৩/২০২৩ ইং তারিখে পাশ্ববর্তী নূরুল ইসলাম মিয়া(৭৫) এডিএম কোর্টে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং ৪৮১/২৩। আদালত সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাকলিয়া কে দখল বিষয়ে প্রতিবেদন এবং থানাকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ডবলমুরিং মডেল থানা থেকে নোটিশ প্রেরণ করা হলে বিবাদী পক্ষ আইনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে নিজেদের ক্ষতি উপেক্ষা করেও নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। দখল বিষয়ে প্রতিবেদনের জন্য পরিমাপ করতে ৫/৪/২০২৩ ইং তারিখে সরেজমিনে সার্ভেয়ার আসার কথা লিখিত নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল।

শাহনাজের মারমুখী আচরণ

যথাসময়ে সার্ভেয়ার কয়েকজন সহকারী নিয়ে মামলার তপশীলোক্ত সম্পত্তি পরিমাপ করতে গেলে বাদী পক্ষের প্রায় ১৫-২০ জন উশৃংখল নারী- পুরুষ প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে এবং সার্ভেয়ারের সাথে দূর্ব্যবহার করে। বাদী নূরুল ইসলাম মিয়া এবং বিবাদী পক্ষের কয়েকজন লোক সার্ভেয়ারকে সহযোগিতা করলেও নূরুল ইসলাম মিয়ার ছেলে আলমগীর, ভাতিজি শাহনাজ, মাহবুবের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন পুরুষ -মহিলা সার্ভেয়ারের উপর উত্তেজিত হয়ে জমির পরিমাপে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে। সবাই উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে এখানো কোন প্রকার পরিমাপ হবে না। এসময় তারা বাদীপক্ষের লোকদের দিকে তেড়ে আসেন এবং সার্ভেয়ারকে উদ্দেশ্য করেও বিভিন্ন কটুক্তি করে। এসময় উচ্চস্বরে শাহনাজ বলতে থাকেন প্রতিবেদন নিজেদের বিপক্ষে গেলে সার্ভেয়ারকে গণধোলাই দেয়া হবে।

দলবল নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহনাজ বলেন, সার্ভেয়ার পরিমাপ করতে এসে শুধু আমার চাচাকে ডেকেছেন তাই উনাকে ধমক দিয়েছি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করিনি। মামলার বাদীকে না ডেকে অন্য কাউকে কেন ডাকবে এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহনাজ বলেন নূরুল ইসলাম মিয়া (চাচা) বৃদ্ধ লোক, উনি কিছু বুঝেন না। মামলা আমরা করিয়েছি, তাই আমাদেরকে ডাকতে হবে।

বিবাদী পক্ষের আবুল কাশেম মিয়ার ওয়ারিশ, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কার্যনিবাহী সদস্য, পোস্তার পাড় আছমা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সমাজ কল্যাণ এর সদস্য মোহাম্মদ হোসেন আরশাদ বলেন “দেওয়ানহাট এলাকার সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে মাহাবুব – শাহানাজ। এই চক্রের কারণে এলাকার মানুষের মাঝে প্রতিনিয়ত আতঙ্ক বিরাজ করে। কখন কাকে কিভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে হয় সেটা তাদের ভালো করে জানা আছে। এই কারণে তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পান না।

তিনি আরো বলেন, বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম মিয়াকে তারা পুতুল বানিয়ে আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য ব্যবহার করতেছে। আর না হলে নুরুল ইসলাম মিয়ার মামলার তপশীলোক্ত জমির সাথে আমাদের নির্মাণাধীন ভবনের জমির কোন সম্পর্ক নেই। নূরুল ইসলাম মিয়ার জমি বিএস ২৭১০ নং দাগে আর আমাদের নির্মাণাধীন ভবনের জমি বিএস ২৭১২ নং দাগে। এই দুইটি দাগের দূরত্বও আনুমানিক ২০০ মিটার। আমাদেরকে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতে এই বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম মিয়াকে ব্যবহার করেছে মাহাবুব – শাহানাজ চক্র। আদালতের নির্দেশে সার্ভেয়ার সরেজমিনে পরিমাপ করতে আসছে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটতে চায়, কারণ তারা জানে সঠিকভাবে পরিমাপ হলে তাদের দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হবে।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি বাদী- বিবাদী উভয় পক্ষকে পূর্বে নোটিশ প্রেরণ করে সরেজমিনে পরিমাপ করতে গিয়েছিলাম। বাদীপক্ষ আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেও আমি সফলভাবে পরিমাপ করে চলে এসেছি। আসলে সবার আচরণ তো একরকম না, তাই আমি এটা নিয়ে আইনগত কোন পদক্ষেপ নিইনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print