প্রভাতী ডেস্ক : রাজধানীতে বিএনপির পদযাত্রা নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারি দলের নেতাদের সমালোচনার জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আপনাদের সময় শেষ; আগামীতে হবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বাংলাদেশ। সেজন্য আমরা আপনাদের বিদায়ের অগ্রীম শোভাযাত্রা হিসেবে এ পদযাত্রা করছি।’
মঙ্গলবার(৩১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে তৃতীয় দিনের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
শনিবার রাজধানীর বাড্ডা থেকে রামপুরা হয়ে মালিবাগ হোটেল পর্যন্ত প্রথম পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এরপর সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে দ্বিতীয় পদযাত্রা শুরু হয়ে শ্যামপুর পর্যন্ত। এ কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
বুধবার রাজধানীর মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত চতুর্থ পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
মঙ্গলবার তৃতীয় পদযাত্রার আগে দুপুর ১২টা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালের আরিচা সড়কে সমবেত হন।
নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এ সময় সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেন তারা। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পদযাত্রা গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আওয়মী লীগ ভয়ে ভীত হয়ে আমাদের পদযাত্রা নিয়ে নানা সমালোচনা করছে। আমরা আপনাদের বলতে চাই, আপনাদের সময় শেষ। আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বাংলাদেশ। অতএব প্রস্তুতি নিন। আমরা কিন্তু আপনাদের অগ্রিম বিদায়ের শোভাযাত্রা করছি এই পদযাত্রার মাধ্যমে।’
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা মনে করেছিলেন মামলা-নির্যাতন করে বিএনপিকে ঘরে বসিয়ে দেবেন। বিএনপি এবং দেশের জনগণ প্রমাণ করেছে, তারা বসে যায়নি, বরং আপনাদের বিদায় করার জন্য রাস্তায় নেমেছে। আওয়ামী লীগ দেশের সব কিছু ধ্বংস করেছে। তাই তারা দেশের কোনো কিছু মেরামত করতে পারবে না। তাদের বিদায় যত দ্রুত সম্ভব হবে, জনগণ ও দেশের জন্য ততই মঙ্গল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানোর জন্য, দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব হচ্ছে বিএনপির। কারণ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আর খালেদা জিয়া দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। যাতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়। সেজন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যারা ধ্বংস করে দিয়েছে, তারা এ দেশে কোনোভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। সেজন্য এ সরকারকে বিদায় করতে হবে।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে এত লিখালিখি, বিদেশিরা এত চাপ দিচ্ছে, এরপরও কি পরিমাণ দুর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে! দুর্নীতি দমন তো দূরের কথা, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৩ থেকে ১২ তে নেমে এসেছে। এই দুর্নীতি করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সিন্ডিকেট। সুতরাং তাদের পক্ষে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকার মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। তাদের বিদেশে টাকা পাচার, লুটপাটের কারণে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। তারপরও বলে অর্থনীতি সবদিকে ভালো। তাহলে দ্রব্যমূল্য বাড়ে কেন? ১৯ দিন আগে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল, আজকে ফের ৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। আবার বলেছে মাসে মাসে নাকি দাম বাড়াবে। তার মানে সরকারের হাতে টাকা নেই। জাহাজ এসে বসে আছে, টাকা দিতে পারে না সেজন্য মাল খালাস হয় না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘দেশের জনগণের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের বিদায়ের আন্দোলনে আমরা অগ্রসর হব। অতি দ্রুত আমরা এই সরকারকে বিদায় দিতে সমর্থ হব।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, নাজিমুদ্দিন আলম, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.