Search

মঙ্গলবার, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মঙ্গলবার, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

কর্ণফুলীতে টাকা ভাগাভাগির পর বাবার লাশ দাফন হলো ৪০ ঘণ্টা পর!

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে বাবার মৃত্যুর পর উঠানে লাশ ফেলে রেখে টাকা নিয়ে সন্তানদের বিরোধের ঘটনায় সেই মনির আহমদের (৬৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার(২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মৃত্যুর প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান গ্রামের দিঘীর পাড় এলাকায় নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর সাথে গতকাল রোববার বিকেলে বাবার লাশ উঠানে ফেলে রেখে তার অবসরের পর পাওয়া ব্যাংক জমা ৫০ লক্ষ টাকা ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে ৫ সন্তান দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। সেদিন তারা বাবার লাশ একটি ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রেখে বিবাধে লিপ্ত হয়ে পড়েন।

এমনকি বাবার দাফনে বিলম্ব হওয়া নিয়েও সন্তানরা ভ্রুক্ষেপ করেননি। পরে সন্ধ্যায় স্থানীয়রা পুলিশ ও চেয়ারম্যানকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্তানদের নিয়ে বৈঠকে বসেন থানার ওসি দুলাল মাহমুদ ও ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম। এতে লাশ দাফনে প্রায় ৪০ ঘণ্টা বিলম্ব হয়। বৈঠকে জমা ৫০ লাখ টাকা থেকে চিকিৎসা খরচ বাদ দিয়ে বাকি টাকা সন্তানদের সবার মাঝে সমহারে বন্টনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর সোমবার সকাল দশটায় মনির আহমদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

মৃত মনির আহমদ পদ্মা অয়েলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ওইদিন রাত এগারোটায় তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয়। মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলে তার মেয়ে বেবি আক্তারের সঙ্গে ভাইদের ঝগড়া শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, মনির আহমদের অবসরের টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে বেবি আকতারের সঙ্গে অন্য ভাইবোনদের বিরোধ চলছিল। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মারা যাওয়ার পর শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে এনে লাশ রেখে দেন বাড়ির পাশের সড়কে। এর পর অবসরে টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলে। এ নিয়ে রোববার সকালে ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক বৈঠকও হয়েছে।

বড় উঠান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল আলম জানান, অবসরের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মনির আহমদের সন্তানরা লাশ সড়কে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রাখে। রবিবার রাত পর্যন্ত লাশ সড়কেই পড়ে থাকে। পরে জনপ্রতিনিধিরা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ লাশ দাফনের পর তার অবসরের টাকা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সমবণ্টনের আশ্বাস দিলে বৃদ্ধের সন্তানরা লাশ দাফনের অনুমতি দেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print