প্রভাতী ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ৪ দিনের সরকারি সফরে দিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান অভ্যর্থনা জানান।
শেখ হাসিনার সম্মানে বিমানবন্দরে বিছানো হয় লাল গালিচা। এ সময় সেখানে ৬-৭ সদস্যের একটি সাংস্কৃতিক দল স্বাগত নৃত্য পরিবেশন করে এবং বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্বালানি, অভিন্ন নদ-নদীর পানি বন্টন ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহযোগিতার বিষয় আলোচ্যসূচির শীর্ষে থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সফরকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করবেন। করোনাভাইরাস মহামারি প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ সালে সবশেষ ভারত সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় ৩ বছর পর ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর তার আসন্ন ভারত সফরের সময় বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে ৬ সেপ্টেম্বর হায়দ্রাবাদ হাউজে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং একান্ত বৈঠক করার কথা রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পরে একটি প্রেস বিবৃতি জারি করা হবে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউজে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন। শেখ হাসিনা পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক তার সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।
৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের প্রথম দিনে দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে তার। এদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং দেশটির শীর্ষ শিল্পগ্রুপ আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনখারের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার দেখা করার কথা রয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী।
৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ বা গুরুতর আহত ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসারদের বংশধরদের ‘মুজিব বৃত্তি’ প্রদানের একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার আগে রাজস্থানের খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফ ও আজমির (আজমির শরীফ দরগাহ) পরিদর্শন করবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে এ সফরে থাকার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শেষ মুহূর্তে সফর বাতিল করেছেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ড. মোমেনের দিল্লি সফর চূড়ান্ত ছিল। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) ড. মোমেন নিজেও জানিয়েছিলেন তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। তবে আজ অসুস্থ হওয়ায় দিল্লি সফরে যেতে পারেননি তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.